বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফুল গাছ খাওয়ার অপরাধে ছাগল মালিকের দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিন। এতেও খ্যান্ত না হয়ে ওই ছাগল কে ৫ দিন আটকে রাখার পর বাজারে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহি অফিসারের বিরুদ্ধে। এতে বিপাকে পড়ে ছাগল মালিক দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ছাগল ফেরত পাওয়া আশায়। এমন খবর গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হাউ মাউ করে কেঁদে কেঁদে ঘটনার বর্ণনা দেন ছাগল মালিক সাহারা বেগম (৪৫)। ছাগল মালিক সাহারা বেগম বলেন, এক বছর আগে ছাগলটি ৫ হাজার টাকায় কিনেছি। বর্তমান ওই ছাগলটি ৩ মাসের গাভীন।
ভুক্তভুগী ছাগলের মালিক সাহারা বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের জানায়, আদমদীঘি উপজেলা পরিষদ চত্বরের ডাকবাংলো সংলগ্ন বসবাসরত জিল্লুর রহমানের স্ত্রী সাহারা খাতুন তার সংসার চালাতে মুরগী ও ছাগল পালন করে অতি কষ্টের মধ্যে জীবন যাবন করেন। ছাগলটি গত ১৭ মে দিনের বেলায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢুকে ফুল গাছের পাতা খায়। এ সময় ওই ছাগলটি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিরাপত্তার্কমীকে দিয়ে আটক করে রাখে। ছাগলের মালিক সাহারা বেগম ছাগলটি দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুজির পর দেখতে পায় উপজেলা চত্বরের ভিতর ছাগল কে বেঁধে রেখে ঘাস খাওয়াচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের এক নিরাপত্তাকর্মী। এ সময় ছাগলের মালিক সাহারা বেগম ছাগল নিতে চাইলে তাকে ছাগল দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে ছাগলের মালিক ছাগল ফেরত পাওয়ার আশায় ৫ দিন ধরে উপজেলা নির্বাহি অফিসারের নিকট ধর্ণা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। বরং ছাগলের মালিকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাড়িয়ে দেয় হয়। এরপর তাকে বলা হয় ফুল গাছের পাতা খাওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিয়ে ছাগল ছেড়ে নিয়ে যান। এদিকে ছাগলের মালিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে না পারায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ২২মে শনিবার ছাগলটি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী সাহারা খাতুন জানান। তিনি আরোও জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বাসার গৃহকর্মী মারফত খবর দেয় ছাগলটি ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বাজারে। জরিমানার ২ হাজার টাকা বাদ দিয়ে ৩ হাজার টাকা ছাগল মালিককে নিয়ে আসার জন্য বলে। অবশেষে বুধবার ভুক্তভোগী সাহারা বেগম গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি জানান। এ ব্যাপারে উপজেলা বগুড়া বারের সিনিয়র আইনজীবী এ্যাড.শেখ কুদরত-ই-এলাহী কাজল বলেন, কোন গাছ পালা খেলে ছাগল সর্বোচ্চ খোয়ারে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু ছাগল আটক রেখে বিক্রি করবে এটা অত্যন্ত অন্যায় কাজ। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি জানান, ফুল গাছ খাওয়ার অপরাধে মালিকের অজান্তে ছাগলকে মোবাইল কোর্টের আওতায় এনে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি আরোও বলেন, ছাগল বিক্রি করা হয়নি একজনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।