করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার পর থেকে একটি দিনের জন্যও কাজ থেকে দূরে থাকেননি সৈয়দপুর পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। নিয়ম মেনে প্রতিদিনই পাড়া-মহল্লা থেকে গৃহস্থলী বর্জ্য সংগ্রহ করছেন তারা। ফেলেছেন নির্ধারিত স্থানে। এর আগে বর্জ্যরে ধরন ভেদে আলাদা করার কাজটিও তারা করছেন নিজ হাতে। যেভাবে সব সময় করেন। শহরের অনেকের প্রশ্ন করোনায় কতটা নিরাপদ পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন দিন যত যাচ্ছে করোনা ভাইসের সংক্রমন বাড়ছে। সাথে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের সংক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কারণ পৌর এলাকায় এমন কম ওয়ার্ড আছে যেখানে করোনা আক্রান্ত রোগী নেই। প্রতিদিনের গৃহস্থলী বর্জ্যরে পাশাপাশি করোনা রোগীর বর্জ্যও হচ্ছে। এগুলো তুলে দিচ্ছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের হাতেই। অথচ এসব জীবানু মিশ্রিত বর্জ্য থেকে যে কারোই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। সেই হিসেবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর স্বাস্থ্যঝুঁকি খুব বেশি। সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী বলছেন তারা করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করছেন। মাস্ক, গ্লাভস, গামবুট, ফেসশিল্ড এমনকি পিপিইও দিচ্ছেন। তবে এগুলো ব্যবহারে অতটা আগ্রহ নেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের। তারা এসব সামগ্রী নিলেও ঠিকঠাক ব্যবহার করছেন না। অনেকে এসবের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কেও জানেন না। পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজের সময়ও মাস্ক, গ্লাভস ব্যবহার করছেন না। তিনি বলেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা যাতে এগুলো ব্যবহার করে সে ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি। পৌরসভার প্রকৌশলী আইয়ুব আলী জানান, পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিশ্চয়তার নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সামগ্রী সরবরাহ অব্যাহত আছে। ঝুঁকি এড়াতে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের এসব ব্যবহারে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই এগুলো ব্যবহার করছেন না। এ ব্যাপারে পৌর প্যানেল মেয়র-১ শাহিন হোসেন বলেন এখন অনেক বাসাবাড়িতে করোনা রোগী আছে তাদের বর্জ্যটা কিন্তু সবার সাথেই চলে আসছে। এ বর্জ্যগুলো কিন্তু আলাদা করে আসছে না। পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা যেন মাস্ক, গামবুট, গ্লাভস এই তিনটি জিনিস তারা অবশ্যই ব্যবহার করেন আমরা এটা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি।
ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে পৌর স্বাস্থ্য বিভাগের একজন বলেন, ঝুঁকি দিন দিনই বাড়ছে এবং মারাত্মক আকারে বাড়ছে। সে হিসেবে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রয়েছেন, সুপারভাইজার আছে, মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করে তাদের মাধ্যমে আমরা পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এদিকে কোন পরিচ্ছন্নতা কর্মী যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাদের বিষয়ে বাড়তি কোন ব্যবস্থা করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমাদের যে কোন কর্মী তারা যারাই হোক তাদের চিকিৎসা এবং তাদের যে কোন সহযোগিতা বা সাহায্য লাগে সেটা অবশ্যই আমরা পৌর কর্তৃপক্ষ করবো।