ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলা হরিপুর-ধীরগঞ্জ সড়কের ধীরগঞ্জ বাজার সংলগ্ন ব্রিজের দক্ষিণ পাশে রাস্তার খোলা আকাশের নিচে এক মাসের অদিক সময় ধরে বসবাস করছে ভারসাম্যহীন মধ্যবয়সী এক নারী।
ঝড় বৃষ্টি সময়েও তাকে দেখা যায় ঐ স্থানে খোলা আকাশের নিচে বসে থাকতে। ভারসাম্যহীন এই নারীর খোঁজ রাখে না কেউ। নেই খাওয়া দাওয়ার চাহিদা। খাদ্য সংগ্রহের জন্য এই ভারসাম্যহীন নারী কারো কাছে হাতও পাতে না। কেউ যদি দয়া করে নিজ ইচ্ছায় তাকে খাবার খেতে দেয় তাহলে সেদিন দুমুঠো খাবার খেয়ে জীবন নির্বাহ করে থাকে। নিজে কখনো সে কারো কাছে চেয়ে খাবার খায় না। দিনের পর দিন অনাহারেই কেটে যায় তার জীবন।গায়ের রং কালো।
তিনি সড়কের পাশে একা একা বসে থাকতে দেখা যায় সব সময়। এই রাস্তার ধারে খোলা আকাশের নিচে চলে তার জীবন যাপন। রোধ- বৃষ্টি প্রতিদিনই তার সঙ্গি। এখ মাসের অধিক সময় ধরে তাকে রাস্তার পাশে দেখা যায়। তার পরিচয় সম্পর্কে কিছুই বলতে পারে না এই এই ভারসাম্যহীন মহিলা।
স্থানীয় লোকজন তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলতে পারছে না। এমনকি সে কারো সাথে কোন কথা বলছে না। এখ মাসের অধিক সময় ধরে রাস্তার পাশে বসে থাকা এই নারীকে সে স্থানও পরিবর্তন করতে দেখা যায়নি।
এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দা জানায়, বেশ কিছু দিন ধরে রোধ-বৃষ্টির মধ্যে তাকে এই রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখা যায়। বৃষ্টিতে পানিতে ভিজে কাপতে দেখে স্থানী এক মহিলা তার পরণের কাপড় পরিবর্তন করে দেয়।তবুও ঐ ভারসাম্যহীন নারী রোদ বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকে। মাঝে মধ্যে স্থানীয় এক মহিলা তার বাসা থেকে খাবার নিয়ে তাকে খাওয়ান ও পরনের ময়লা কাপড় গুলো বদলে দেয় বলে এলাকাবাসীরা জানিয়েছে।স্থানীয়া মহিলারা৷
স্বপন নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন রোদ বৃষ্টির মধ্যে বসে থাকা ভারসাম্যহীন এই নারীর কষ্ট দেখে আমি প্রতিদিন দুপুরে নিজে বাড়ি থেকে তার জন্য খাবার এনে দিই। সকাল হলেই পাগলী রাস্তার দিকে খাবারের জন্য তাকিয়ে থাকে কখন তার খাবার নিয়ে আসবে কেউ। সাইফুল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন প্রায় ২ মাস আগে এই ভারসাম্যহীন নারীকে রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখতে পাই। কোথা থেকে বা কখন তার এই স্থানে আগমন হয়েছে তা আমার জানা নেই। তার গন্তব্য কোথায় এটাও জানেনা কেউ!
স্থানীয়রা বলেন এই ভারসাম্যহীন নারীর নেই কোনো বাড়ি-ঘর ! নেই তেমন কোনো পরণের কাপড়-চোপড়। কে এই ভারসাম্যহীন নারী। তার খবর রাখার মত কেউ নেই। তারা আক্ষেপ করে বলেন, এই ভারসাম্যহীন নারী তো বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী একজন নাগরিক। নাগরিক হিসেবে তার তো রাস্ট্রের কাছে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তিনি তো রাষ্ট্রের নিকট তার মৌলিক অধিকারগুলো দাবী করেন না, করতেও জানেন না। তাহলে রাস্ট্র কি তাকে ঝড় বৃষ্টি থেকে রক্ষা করতে একটা ঘরের ব্যবস্থা করতে পারে না। তার মৌলিক অধিকার গুলো দেখার কি রাস্ট্রের না।
হরিপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন এইরকম ভারসাম্যহীন লোকজনের জন্য রাষ্ট্রের করণীয় থাকা উচিত। এসব মানুষগুলোকে রাষ্ট্র সরকারী খরচে তাদের দেখা শুনা করা উচিৎ। কিন্তু বেঁচে থাকা কালীন সময়ে তাদের চাওয়া ও পাওয়া কখনো মানুষের নিকট হতে, সমাজের নিকট হতে, রাষ্ট্রের নিকট হতে পূরণ হয়না। আমি অনুরোধ করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ভারসাম্যহীন নারীর একটা ঘর ও এক মুঠো খাবারের ব্যবস্থা করে দেওয়ার।