জ্যৈষ্ঠের অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ প্রাণীকুল। এর মধ্যেই বাজার জুড়ে নানা রকম মৌসুমি ফল উঠতে শুরু করেছে। এসব মৌসুমি ফলের পাশাপাশি কদর বেড়েছে সুস্বাদু তালশ্বাসের। রসালো ফল তালের শাঁস। গরমে হাঁসফাস করা তালশ্বাসের রসে পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছেন। জ্যৈষ্ঠের শুরুতে পাবনার বেড়া উপজেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নের হাট বাজারে উঠেছে এই ফল। মিষ্টি রস আর নরম শ্বাস- দারুণ স্বাদের তালশ্বাসের বিক্রির ধুম পরেছে। এটি পুষ্টিকর খাদ্য। শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে খাওয়া যায় পাকা তাল। কোন কোন বিক্রেতা ভ্যানযোগে গ্রামে গ্রামে ঘুরে তালশাঁস বিক্রি করছেন। বিক্রেতারা বিভিন্ন উপজেলা থেকে তালশাঁস ক্রয় করে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এ অঞ্চলের প্রায় শতাধিক পরিবারের লোকজন বেড়া উপজেলার পৌর সদরের খেয়াঘাট এলাকায় একজন তালশ্বাঁস বিক্রেতা জানান, প্রতিবছর মধুমাসে সে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারী দামে তালশ্বাঁস ক্রয় করে বিক্রি করে আসছেন।
কিন্তু তালগাছ আগের তুলনায় কমে যাওয়ায় এই ফল এখন আর আগের মতো পাওয়া যায় না। ফলে চড়া মূল্যে এ মৌসুমী ফল বিক্রি করতে হচ্ছে। বর্তমাসে প্রতিটি তাল শাঁস তিন আঁটি ১৫ টাকা হিসেবে প্রতিদিন সে চার’শ থেকে পাঁচ’শ টাকা আয় করছেন। বেড়া বাজারে ১০/১২ টি স্পটে প্রতিদিনই তালশ্বাস বিক্রি হচ্ছে। তালশাঁস বিক্রেতারা আরও জানান বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তালগাছ খুঁজে বের করি। ছোট তালশ্বাস গাছ ধরে কিনতে হচ্ছে ৩’শ ৫০ থেকে ৪’শ টাকায়। ভালো ও বড় আকারে তালশাঁস গাছের ফল কিনতে ৪’শ ৫০ থেকে ৫’শ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাতে করে ভ্যান ভাড়া ও অন্যান্য খরচ বাদে প্রায় প্রতিদিনই ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা আয় করছেন তারা। সৌখিন ক্রেতা থেকে শুরু করে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা প্রচন্ড গরমে একটু স্বত্বি পেতে এখন ভীড় করছেন তালশ্বাঁস বিক্রেতাদের কাছে। ক্রেতারাও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তালশ্বাঁস। রিক্সা চালক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণী বা পেশার লোকজনই মৌসুমী ফল তালশ্বাঁস কিনতে ভীড় করছেন বিক্রেতাদের কাছে চলতি মৌসুমে তালের সংখ্যা কম হওয়ায় মুহুর্তের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে মৌসুমী ফল তালশ্বাঁস। খোঁজ নিয়ে আরোও জানা গেছে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এ অঞ্চলে তালগাছ বর্তমানে বিলুপ্ত প্রায়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে তাল গাছের চাষ করা সম্ভব হচ্ছে না ফলে ঐতিহ্যবাহী তালের রস, তালের গুড় ও তালের পাটালি হারিয়ে যেতে বসেছে।