দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় ডায়রিয়া রোগীর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বোয়ালখালী, পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে এই ধরনের রোগী বেড়েছে। এসব রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের কর্মরত চিকিৎসকরাও। হাসপাতালে বেড না পেয়ে ফ্লোরেও রোগীদের চিকিৎসা চলছে। গত কয়েকদিনে ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গুলোতে রোগী ভর্তির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ৫০ শয্যার হাসপাতালে দিনে ১১০ থেকে ১১৭জন পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। প্রচন্ড গরমের কারণে নলকূপের পানির লেয়ার কমে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে পুকুর ডোবার ময়লা-অপরিস্কার পানি ব্যবহার করছেন। বাসি-খোলা খাবারও খাচ্ছেন। মৌসুমী ফল-মূলের ওপর মাছি বসছে। এগুলো ভালো করে না ধুয়ে খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে বলে অনেকেই জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে মোট ৮০ জন রোগী ভর্তি ছিল। এরমধ্যে ৬৫ জনই ডায়রিয়া রোগী। এতে ৪০জনই ৩১মে ভর্তি হয়েছেন। ওদিকে আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতালেও গত এক সপ্তাহে ৩শ’র বেশি ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন। দিনদিনই বাড়ছে ওই রোগের প্রকোপ। আনোয়ারা উপজেলা ৫০ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন ৭২ জন। যার মধ্যে ৬০জনের বেশি ডায়ারিয়া রোগী। অনেকে করোনা সংক্রমণের ভয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন না। মঙ্গলবার সকালে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন ৪৫জন জন ডায়রিয়া রোগী। আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু জাহিদ মো. সাইফ উদ্দিন বলেন, প্রতিদিনই ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এখন আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স জয়া দাশ বলেন, নার্স সংকট রয়েছে। আবার রোগীর চাপও বেশি থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এরপরেও খাবার স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে ডাক্তার নার্সরা সার্বক্ষণিক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। বোয়ালখালী উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক মাসে ৯শ’ জনের মতো ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। এই বিষয়ে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে ৭৬ জনের মতো রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাঁশখালী উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১ সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছেন ৬৮ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৯ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৯ জন।