ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পুলিশের সহকারি উপপরিদর্শক (এএসআই) মতিয়ার রহমান শিকদার এর বিরুদ্ধে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ভাতিজা জনি সরদার (৩০)কে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার বানা ইউনিয়নে টোনাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার রাতে মামলা হয়েছে আলফাডাঙ্গা থানায়। এ মামলার বাদী হয়েছেন জনি সরদারের বড় ভাই জুয়েল সরদার।
মামলায় পুলিশের এএসআই মতিয়ার রহমান সিকদার(৫৮), তার ছেলে গোলাম রাব্বী সিকদার (২৮), মতিয়ারের ভাই সাবেক সেনা সদস্য আহাদুজ্জামান (৪৮), তার স্ত্রী ডেজি বেগম (৩৬) ও তার মেয়ে রিতু খানম (১৯)কে আসামি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বানা ইউনিয়নে টোনাপাড়া গ্রামে মৃত নাদের সিকদারের চার ছেলে। বড় ছেলে আতিয়ার বহু আগে মারা গেছেন, দ্বিতীয় ছেলে এএসআই মতিয়ার রহমান শিকদার (৫৮), তৃতীয় ছেলে সাবেক সেনা সদস্য আহাদুজ্জামান ও চতুর্থ ছেলে বেলায়েত। পৈত্রিক ভিটায় পাকা ঘর নির্মান নিয়ে মতিয়ার ও আহাদুজ্জামানের সাথে আতিয়ারের সন্তাননদের সাথে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জেরে বাড়িতে ইটা আনা নিয়ে জুয়েল ও জনির সাথে তার দুই চাচা পুলিশ সদস্য মতিয়ার ও সাবেক সেনা সদস্য আহাদুজ্জামানের বচসা হয়।
জনির মা রহিমা বেগম বলেন, তার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই তার দুই দেবর তাদের উপর অত্যাচার শুরু করেন। ২০১১ সালে ঘর করার জন্য বালু আনা তখনও তাদের উপর হামলা চালানো হয়। ঘর করতে দেয় নাই, জমা জমি ভাগ করে দেয় না, কিছু জমি জোর করে রেকর্ড করে নেয়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বোয়ালমারীতে বাসা ভাড়া করে থাকি। ছেলেরা বাপের ভিটায় ঘর তুলতে ইট, বালু আনলে গত ৩০ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মতিয়ার ও আহাদুজ্জামান এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা রামদা, রড, লাঠি নিয়ে হামলা চালায়।
বাদী জুয়েল সিকদার বলেন, কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আমার চাচা মতিয়ার ঘর থেকে রামদা এনে জনির মাথায় ও বাম হাতে কোপ দেয়। এ ঘটনায় জনি গুরুতর আহত হন। জনিকে প্রথম আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা অবনতি হওয়ায় রাত ৯টার দিকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতাল ও কলেজে স্থনান্তর করা হয়।
জনি ফরিদপুর সরকারী রাজেন্দ্র করেজের মাষ্টার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি একটি ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।
এএসআই মতিয়ার রহমান শিকদার পুলিশ সুপারের রিজার্ভ ফোর্স'র অধিনে বর্তমানে পাশের বোয়ালমারী থানাতে কর্তব্যরত আছেন।
এএসআই মতিয়ার রহমান শিকদার বলেন, তিনি এ ঘটানর কিছুই জানেন না। যখন তাদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার বানা ইউনিয়নে টোনাপাড়া গ্রামে মারামারির ঘটনা ঘটে তখন তিনি বোয়ালমারী থানায় কর্মরত অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, পরে আমি শুনেছি যে আমাকে মামরার আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমার বড় ভায়ের মৃত্যুর পর জুয়েল, জনিসহ আমার ভায়ের ছেলেদের নিজের ছেলের মত লালন পালন করে বড় করেছি। আজ কাদের ইংগিতে তারা আমার নামে মামরা দিল তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
এএসআই মতিয়ার বলেন, আলফাডাঙ্গা থানা আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে। তবে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানির কোন উদ্যোগ নেয়নি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওহিদুজ্জামান বলেন, ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তার ভাতিজারে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রযেছে। তিনি বলেন, এ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি বলেন, মামরার আসামি ওই পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।