জামালপুরের মেলান্দহে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী তানিয়া (৩২) হত্যার ঘটনায় অবশেষে মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তারকৃত ঘাতক স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরকে কোর্টে চালান দিয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে তানিয়ার গ্রামের বাড়ি নয়ানগর গ্রামে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে পারিবারিক কলহের জের ধরে কাজাইকাটা গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে গ্রেপ্তারকৃত আ.লীগ নেতা ঘাতক স্বামী আবু তাহের তার স্ত্রী তানিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে। ওদিকে ঘাতক স্বামী আবু তাহের গোপনে স্ত্রীকে দাফনের জন্য কবরও খোড়ে। বিকেল ৩টার দিকে লাশের গোসল দেয়ার সময় এলাকাবাসীর মাঝে গুঞ্জনের শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে স্বজনদের কাছে তানিয়ার মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের অসুস্থ বাবা হাছেন আলী আবু তাহেরের বাড়িতে গেলে তাকে আটকে রাখে। পাড়াপড়শিদেরও আবু তাহেরের বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘাতক স্বামী আবু তাহেরকে আটক করে।
এলাকাবাসি ও নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, তিনদিন যাবৎ তানিয়াকে মারপিট অব্যাহত রেখেছে। ঘটনার দিন নির্যাতিত তানিয়া আত্মরক্ষার জন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। শাবল দিয়ে কক্ষের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে তানিয়াকে গলায় কাপড় পেচিয়ে শ^াসরোধে হত্যা শেষে ওই কক্ষেই ফাসিতে ঝুলিয়ে রাখে। উৎসুক জনতার কাছে কখনো আত্মহত্যা, কখনো বিষপান, কখনো স্ট্রোকে মৃত্যুর কথা প্রচার করলে জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি করে। স্বজনরা আরো জানান-তানিয়ার মৃত্যুর পর তার মুখে বিষও ঢেলে দেয়া হয়।
তানিয়ার খালা শামসুন্নাহার জানান-৩বছর আগে ব্যবসার জন্য আমার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা ধার নেয়। এই টাকার জন্যই বিরোধের জের ধরে তানিয়াকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। ১০/১২ বছর আগে মেলান্দহ পৌরসভার নয়ানগর গ্রামের হাছেন আলীর মেয়ে তানিয়াকে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে বিয়ে করে। কিন্তু আবু তাহেরের পিতা-মাতা এই বিয়ে মেনে নিচ্ছিল না। তারা মেলান্দহ সদরে ভাড়াটে বাসায় থাকতো। গত ঈদের দুইদিন পর স্বপরিবারে আবু তাহেরের বাড়িতে চলে যায়। তাদের ঘরে দুই সন্তান আছে। এই ঘটনার পর থেকেই আবু তাহেরের দুই সন্তান নিয়ে পিতা-মাতা ঘা ঢাকা দিয়েছে।
অফিসার ইনচার্জ মায়নুল ইসলাম জানান-নিহতের বাবা হাছেন আলী বাদি ঘাতক স্বামী আবু তাহেরসহ আরো ৪জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। লাশের গায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।