মজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ‘সবার জন্য বাসস্থান’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ঘরহীন মানুষের ঘর করে দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় ঘর প্রকল্পকে একত্র করে এই উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এর মধ্যে আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের জমি ও ঘর নেই তাদের জমিসহ ঘর করে দেওয়া হবে। আর দুর্যোগ সহনীয় প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের জমি আছে তাদের ঘর করে দেওয়া হবে।
আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের জমি ও ঘর নেই তাদের জন্য গৃহ নির্মাণ’ কাজ দেশব্যাপী চলমান রয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় সরকারের পক্ষ থেকে তৈরি করে দেওয়া ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে দেশের ভূমিহীন পরিবারগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় চলমান রয়েছে গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ সহনীয় ঘর প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ কার্যক্রম। এরইমধ্যে হরিপুর উপজেলায় ৯৩৬টি ভূমিহীন পরিবার এসব সরকারি ঘর পেয়ে আত্মহারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের একটি ঘর ভাগ্যে জোটেনি স্বামী হারা ৮৪ বছরের বৃদ্ধা সলেমা বেগমের। ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বহরমপুর গ্রামে বসবার করে সলেমা বেগম। সে পেশায় ভিক্ষুক। ৭ বছর আগেই মারা যায় স্বামী আলী বকস্। সলেমা বেগম ও আলী বকস্ এর সংসারজীবনে রয়েছে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। কোন ছেলে মেয়ে তার ভোরণ-পোষণ করে না। তিনি এই বৃদ্ধ বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবন নির্বাহ করে।
এলাকাবাসী জানান, ভূমিহীন সলেমা বেগম ও আলী বকস্ দীর্ঘদিন ধরে বহরমপুর গ্রামের অন্যের জমির উপর ঘর করে দীর্ঘ দিন বসবাস করতো৷ স্বামীর মৃত্যুর পর সেলিম (৪০) নামে তার এক ছেলে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় ৪ শতক জমি ক্রয় করেন। ছেলের জমির উপর বাঁশ ও খড় খুটো দিয়ে তৈরী করা একটি ছোট ঝুপড়ি ঘর বসবাস করে সলেমা বেগম। আর্থিক সংকটের কারণে ঘরটি ঠিকমত মেরামত না করার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে খড়ের চালা দিয়ের ঘরের ভিতর পানি পড়ে। ছোট এই শয়ন ঘরেই রান্না করার জন্য একটি চুলাও।
এলাকাবাসী আকুল আবেদন জানিয়েছে সরকারি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট
সলেমা বেগম বলেন, বৃদ্ধ বয়সের কারণে আমি ফুসফুসের সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিলত অসুখে দীর্ঘ দিন ভূগছি। ঠিকমত ভিক্ষাও করতে গ্রামে যাইতেও পারি না। খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে চলে আমার জীবন। সারা দিন ভিক্ষা করে শান্তিতে একটু ঘুমাতেই পারিনা। আর্থিক সংকটের কারণে আমার ঝুপড়ি ঘরটি ঠিকমত মেরামত না করার ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে খড়ের চালা দিয়ের ঘরের ভিতর যখন পানি পড়ে তখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হয়। এই এলাকায় আমার মতো দুঃখী কেউ নেই। তবুও আমি সরকারি একটি ঘর পেলাম না। এইভাবে সলেমা বেগম যখন তার নিজের করুণ কষ্টের কথা বলছিলো তখন তাঁর দু-চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি ঝরছিল। আমার মত অসহায় বৃদ্ধা মহিলাকে সরকারি একটি ঘর দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিকট আকুল আবেদন করছি।
সংশ্লিষ্ট ৩নং বকুয়া ইউপির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বর্ষা জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম আগামীকাল অবশ্যই ঐ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যকে সাথে নিয়ে সলেমা বেগমের বাড়ি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নিব।