শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) এর চা বিজ্ঞানীরা চা দিয়ে গ্রিন টি সাবান, গ্রিন টি ফ্যাসিয়াল, টি ক্যান্ডি, টি ফ্লেভারড চাটনি, টি ফ্লেভারড কুকিজ ও টি আচার উদ্ভাবনে সফলতা অর্জন করেছেন। প্রাথমিকভাবে চা থেকে এসব ভ্যালু এ্যাডেড পন্য উদ্ভাবন এর পাশাপাশি কসমেটিকস উদ্ভাবনে আরো গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী বলেন, চায়ের মধ্যে এন্টি অক্সিডেন্ট ও ক্যাফিনসহ অনেক মূল্যবান উপাদান রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। কাজেই এই সকল উপাদানের উপকারী প্রভাব শুধুমাত্র চা পানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে যদি বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ও পণ্যে অন্তর্ভূক্ত করে দেয়া যায় তবে চায়ের বহুমুখী ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যগতভাবে বেশি লাভজনক হওয়া যাবে।
ড. মোহাম্মদ আলী আরো বলেন, এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে চায়ের বহুমুখী ব্যবহারের ক্ষেত্র তৈরীর লক্ষ্যে চায়ের ফ্লেভার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও খাদ্যসামগ্রী উদ্ভাবনের জন্য বিটিআরআই এর প্রাণ রসায়ন বিভাগে গত বছরের শেষ দিকে এ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়। ইতোমধ্যে সাবান, ক্যান্ডি, কুকিজ, চাটনি, ফ্যাসিয়াল ও আচার উদ্ভাবনের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম সফল হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: জহিরুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি এর পরামর্শক্রমে চা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের কসমেটিকস উদ্ভাবনের বিষয়েও গবেষণা কার্যক্রম চলছে।
বিটিআরআই সূত্র জানায়, এ গবেষণা কার্যক্রমে মূল গবেষক হিসেবে কাজ করছেন ইনস্টিটিউটের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাসুদ রানা। যিনি বর্তমানে ইনস্টিটিউটের প্রাণ রসায়ন বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ৪ জুন শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটে জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠানে ওই প্রতিষ্ঠানের টি টেস্টিং কক্ষে বিটিআরআই এর চা বিজ্ঞানীদের গবেষণায় চা দিয়ে উদ্ভাবিত গ্রিন টি সাবান, গ্রিন টি ফ্যাসিয়াল, টি ক্যান্ডি, টি ফ্লেভারড চাটনি, টি ফ্লেভারড কুকিজ ও টি আচার প্রদর্শনের জন্য উপস্থাপন করা হয়।
ড. মোহাম্মদ মাসুদ রানা বলেন, চা দিয়ে বিভিন্ন ভ্যালু অ্যাডেড পণ্য উদ্ভাবনের বিষয়টি বিশ্বে নতুন নয়। চা উৎপাদনকারী অনেক দেশেই এ বিষয়ে গবেষণা অনেক এগিয়ে গেছে এবং অনেক পণ্য ইতোমধ্যেই বাজারে এসেছে। বাংলাদেশও একটি চা উৎপাদনকারী দেশ হওয়ায় এখানে কাঁচামালের সহজলভ্যতার কারণে চা গাছের বিভিন্ন অংশ কিংবা তৈরী চা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের ভ্যালু ্অ্যাডেড পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবে দেশে চায়ের বহুবিধ ব্যবহারের ক্ষেত্র সৃষ্টি হলে উপকারী গুনাগুণের কারণে দেশের সাধারণ মানুষ যেমন স্বাস্থ্যগতভাবে লাভবান হবে তেমনি মূল্য সংযোজনের মাধ্যমে চা শিল্প বর্তমান উৎপাদন ব্যয়ের প্রভাবকে প্রশমিত করে অধিক মুনাফা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করা যায়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে এ সকল উদ্ভাবিত পণ্যের গুণগত মানের বিকাশ সাধন করার পাশাপাশি আরো কি কি পণ্য উদ্ভাবন করা যায় সে বিষয়ে চা বিজ্ঞানীরা গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন।