রাঙ্গামাটিতে অতি ভারী বৃষ্টির শুরু হলে আবারো বড় ধরনের পাহাড় ধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ পাহড়ের নীচে মানুষের বসবাস কমেনি বরং আগের চেয়ে আরো বেড়েছে। পাহাড়ের নীচে মানুষ পূনরায় ঘরবাড়ি করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছে। ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে ১২০ জনের প্রাণহানী ঘটে। এবারো অতি ভারী বৃষ্টির আগাম সতর্কতায় সে আশংকায় সকলকে ভাবাচ্ছে।
আর এই বিষয়টি মাথায় রেখে করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ন স্থান চিহ্নিত করে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে বসবাসের উপর সর্তকতা জারী করা হয়েছে এবং বর্ষার শুরু হলেই মানুষ যাতে নিরাপদ আশ্রয়ে সড়ে আসে তা নিয়ে আগাম প্রচারনা শুরু করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
২০১৭ সালে ১৩ জুন ভারী বর্ষনের ফলে পাহাড় ধসের ঘটনায় ৫ সেনা সদস্যসহ ১২০ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ২০১৮ নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে ১১জন এবং ২০১৯ সালে কাপ্তাই উপজেলায় ৭জন প্রাণ হারায়। প্রতিবারই বর্ষায় পাহাড় ধসে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সেই মৃত্যুরকূপে পুনরায় ঘরবাড়ি নির্মান করে বসবাস করছে লোকজন। প্রতি বর্ষা মৌসুমের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঝুকিপুর্ন এলাকা বসবাস ও স্থাপনা নির্মাণ না করতে নিষেধ করে সাইন বোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে সর্তক দিলেও সেই নিষেধাজ্ঞা মানছে না লোকজন। ফলে শহরের রূপনগর, শিমুতলী, ভেদভেদীসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝুঁকি নিয়ে ববসবাস করছে কয়েক হাজার পরিবার।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটি পৌর শহরে ৩৩টি স্থানকে ঝুঁকিপূর্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে সচেতনামূলক সাইন বোর্ড টাঙিয়ে দেয়াসহ নানান পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে। এ ছাড়া ঝুকিতে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার জন্য ২৯টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আর কোথাও যদি পাহাড় ধসে দূর্ঘটনা ঘটে তার জন্য ৯টি ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলরদের নিয়ে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাঙ্গামাটিসহ ৯টি উপজেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, ২০১৭ সালের পাহাড় ধসের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা রাঙ্গামাটি পৌর এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। যাতে করে পাহাড় ধসের কারণে প্রাণহানি আর না ঘটে। ইতোমধ্যে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরে গিয়ে যাতে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যায় তার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে অনেকেই সচেতন হলেও তাদের অবস্থান থেকে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস গড়ে তুলছে। এতে করে ভারী বৃষ্টিপাত হলে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।
বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের পাদদেশে যেসব স্থান নিরাপদ নয় সেইসব এলাকার মানুষরা যদি ভারী বৃষ্টিপাতের সময় অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসে তা হলে পাহাড় ধসের প্রাণহানি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।