নদী ও বিল বিধৌত পাবনার বেড়া উপজেলা মাছ উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। বর্ষা এলেই তাই স্থানীয় বাজারগুলিতে চাঁই ও বুছনা বিক্রির ধুম পরে যায়। তাই চাঁই তৈরিতে ব্যাস্ত হয়ে পরে সংশ্লিষ্টরা। বাড়ির নারীরাই মূলত এসব চাঁই তৈরি করেন। উপজেলার বেড়া বাজার সংলগ্ন স্থানে বসে চাঁইয়ের হাট। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভ্যান বোঝাই করে চাঁই বিক্রির জন্য নিয়ে আসে এখানে। দূর দূরান্ত থেকে মৎস শিকারীরা চাঁই কিনতে আসে। এক একটা চাঁই তৈরিতে একশো থেকে দেড়শো টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে জিনিসের মান বুঝে সেগুলো তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা বিক্রি হয়।
বেড়ায় মূলত নাগডেমড়া, আটিয়াপাড়া, ক্ষিদিরপুর থেকে দোয়ারি বিক্রির জন্য নিয়ে আসে বিক্রেতারা। সেগুলো সিরাজগঞ্জ, বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হয়ে যায়। চাঁই তৈরির সাথে জড়িয়ে রয়েছে কয়েকশ’ পরিবারের জীবন। চাঁই তৈরির কারিগররা বিভিন্ন এনজিও বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আবার কেউ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বাঁশ কিনে চাঁই তৈরি করে। ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দামে বাঁশ কিনে তিনটি চাঁই তৈরি সম্ভব। চাঁইয়ের হাটে বিক্রি করতে আসা ফরিদ জানান, প্রতিটি চাঁই তৈরিতে যা খরচ হয় তা থেকে বিক্রিতে ভালই লাভ হয়। চাঁই পাতলে বোয়াল, বাইন সহ নানা প্রজাতির দেশী মাছ ধরা পরে। পরিশ্রমও কম। একবার দোয়ার পেতে কয়েকঘন্টা পর দেখতে হয় মাছ পরেছে কি না। তাছাড়া বাজারে চাঁইয়ে ধরা মাছের চাহিদাও থাকে বেশি। মাঘ মাসের শেষদিকে বাঁশ কিনে এ কাজ শুরু করতে হয়। চলে আশ্বিন মাস পর্যন্ত। একাধিক বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি সহযোগীতা পেলে আরও বেশি চাঁই বুছনা বানানো সম্ভব। তাছাড়া এর সাথে বাঁশ শিল্পও টিকে থাকবে।