মণিরামপুরের পল্লীতে বৌমাকে মারপিটের প্রতিবাদ করায় দিনমজুর পিতাকে ধারালো করাত দিয়ে কেটে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে পাষন্ড পুত্র। উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের ব্রক্ষ্মপুর গ্রামে এমন লোমহর্ষক ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুত্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার পর হামলাকারী পুত্র বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ব্রক্ষ্মপুর গ্রামের কাঠ শ্রমিক সবুর সরদারের পুত্র হাবিবুর রহমান মিন্টু তার স্ত্রী দুই সন্তানের মা আসমাকে ঘরের দরজা বন্ধ করে বেধড়ক মারপিট করছিলেন। এ সময় বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বৌমাকে মারপিটের প্রতিবাদ করেন পিতা সবুর সরদার (৫০)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে হাত করাত বের করে পিতার বুকের উপর দাঁড়িয়ে হাত এবং পা কাটতে থাকে পাষন্ড পুত্র মিন্টু। একপর্যায়ে পিতা সবুর জ্ঞান হারালে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় মিন্টু। পাষন্ড পুত্র এমন নৃশংসতা দেখে ভয়ে তার হাত থেকে স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি ফরিদা বেগমসহ পরিবারের কেউ। জানাগেছে সবুর সরদারের বড়ি অনেকটা ফাঁকা স্থানে হওয়ায় প্রতিবেশিরা খবর পেয়ে আসার আগেই মিন্টু পালিয়ে গেছে।
সন্তানের হাতে নৃশংসতার শিকার সবুর সরদারের স্ত্রী ফরিদা বেগম বলেন, ঘটনার পর তার স্বামীকে উদ্ধার করে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার হাত এবং পায়ের একাধিক শিরা কেটে যাওয়াসহ হাঁড় পর্যন্ত ক্ষত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যশোর অথবা ঢাকায় নিতে হবে। কিন্তু অভাব অনাটনের কারণে হাঁড় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নজরুল ইসলামের মণিরামপুর পৌর শহরের রোকেয়া ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এমন লোমহর্ষক ঘটনা জানার পর তথ্য সংগ্রহে রোকেয়া ক্লিনিকে যাওয়া হলে ঘটনার বিবরণ জানতে চাওয়া ও ছবি ধারণকালে সাংবাদিক পরিচয় জেনে পাষন্ড পুত্রের কঠোর শাস্তির দাবীতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সবুর সরদার ও স্ত্রী ফরিদা বেগম। এ সময় তারা বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনও মিন্টুকে আটক করতে পারেনি। ফরিদা বেগম আরো বলেন, আনুমানিক ২ মাস আগে ওই পাষন্ড পুত্র তার মা’কে এবং একমাত্র বোনকে বেদুম মারপিট করে।
ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানায়, অস্ত্রপচারের মাধ্যমে সবুর সরদারের হাতের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে, পায়ের অপারেশন যে কোন সময় করা হবে। মণিরামপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শিকদার মতিয়ার রহমান বলেন, পিতার উপর হামলাকারি মিন্টুকে আটকের জোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।