কুড়িগ্রামে করোনা সংক্রমনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় গোটা পৌরসভাকে বিশেষ বিধি নিষেধের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৭জুন) দুপুরে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক ভার্চুয়াল মিটিং-এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শুক্রবার সকাল থেকে কঠোর এ বিধিনিষেধ কার্যকর হবে বলে নিশ্চিত করেছেন এ কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডাঃ হাবিবুর রহমান।
ভার্চুয়াল মিটিং-এ সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম। এ সময় বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্য সচিব সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান, সদস্য ও বিজিবি’র কমান্ডিং কর্মকর্তা জামাল হোসেন, জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব নীলু প্রমুখ।
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, গত দেড় সপ্তাহ ধরে করোন সংক্রমন হার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরমধ্যে চলীত সপ্তাহে মারা গেছে আরো ২জন। এ নিয়ে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ালো ২৭জনে। কুড়িগ্রাম পৌরসভায় করোনা সংক্রমের হার সবচেয়ে বেশি। গত ১৫ জুন কুড়িগ্রাম পৌরসভার ২, ৩ ও ৭নং ওয়ার্ডকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় এক সপ্তাহের জন্য এই ৩টি ওয়ার্ডে বিশেষ বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। এরপরও করোনা বৃদ্ধির মাত্রা আরো বেড়ে যাওয়ায় আগামীকাল (শুক্রবার) থেকে গোটা কুড়িগ্রাম পৌরসভাকে বিশেষ বিধি নিষেধের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। এই বিধি নিষেধের সময় দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সকল প্রকার যানবাহনে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে পরিবহন করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হলে কৈফিয়ত দিতে হবে। হোটেল রেস্তোরা খোলা থাকলেও শুধুমাত্র পার্সেল সরবরাহ করতে পারবে। বিশেষ বিধি নিষেধ কার্যকর করতে পুলিশ বিভাগ থেকে শহরে প্রবেশের ৩টি পয়েন্টে পুলিশি চেক পোস্ট স্থাপন করা হবে। এই চেক পোস্টগুলো হচ্ছে, রংপুর থেকে কুড়িগ্রামে প্রবেশ মুখ ত্রিমোহনী বাজার, নাগেশ^রী-ভূরুঙ্গামারী যাওয়ার প্রবেশ পথ ধরলা ব্রীজ ও চিলমারী-উলিপুর উপজেলা যাওয়ার প্রবেশ পথ টেক্সটাইল মুখ এলাকা। এ ছাড়া শহরে চলছে ভ্রাম্যমান আদালতের কার্যক্রম।
সিভিল সার্জন ডা: মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত ১০জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ২১৫জনের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়েছে। এরমধ্যে ৯০জনের শরীরে করোনার অস্থিত্ব পাওয়ায় গেছে। নতুন করে মারা গেছে ২জন। এই ৯০জনের মধ্যে ৫৮জনই কুড়িগ্রাম পৌরসভা এলাকার। ফলে পৌরসভা এখন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড থেকে বৃদ্ধি করে গোটা পৌরসভাকে বিশেষ বিধি নিষেধের আওতায় আনা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শহিদুল্লাহ লিংকন, ৫০ বেডের করোনা ওয়ার্ডে ২২জন রোগী ভর্তি আছে। ফলে রোগীর সংখ্যা বাড়লে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপাকে পড়বে। সেই সাথে রয়েছে অক্সিজেন ঘার্তি। এ হাসপাতালে আউট ডোরে প্রতিদিন নানা রোগের চিকিৎসা নিতে আসে সহ¯্রাধিক মানুষ। এ ছাড়া ইনডোরে অবস্থান করে প্রায় তিন শত রোগী। বেডে সংকুলান না হওয়ায় তারা ফ্লোরিং করে থাকে। এর উপর করোনা রোগীর চাপে চিকিৎসা বিভাগ হিমসিম খাচ্ছে। এ হাসপাতালে চিকিৎসকসহ লোকবল সংকট দীর্ঘদিনের।