মণিরামপুর উপজেলা স্বস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোসাব্বিরুল ইসলাম রিফাত মণিরামপুরে করোনা রোগীর একমাত্র ভরসাস্থল হয়ে উঠেছেন। গত বছরের ৮ই মার্চ দেশে করোনা রোগী সনাক্তের পর থেকে তিনিই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে করোনা রোগী সনাক্তকারীদের নিকট ছুটে গেছেন। যা আজও অব্যাহত রয়েছে। মণিরামপুরাসীর নিকট এখন একমাত্র করোনা রোগী সেবী ডাক্তার হিসেবে সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে মোঃ মোসাব্বিরুল রিফাত।
জানাগেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে করোনা আক্রান্ত এক রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সেই বাড়িতে হাজির হন চিকিৎসক রিফাত। কোন যানবাহন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না চাইলেও অনেক পীড়াপিড়িতে এক ভ্যানওয়ালা ওই নারীকে নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে কেউ এগিয়ে না এলেও মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ লিটন ওই রোগীকে হাত ধরে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে পৌছে দেন। বিষয়টি নিয়ে এক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক আবেগঘন পোষ্টদেন ডাঃ রিফাত। যা মুহুর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ডাঃ মোসাব্বিরুল ইসলাম মণিরামপুর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে মেডিকেল কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রথম থেকেই করোনাক্রান্ত রোগীদের হাসপাতাল, রোগীর বাড়িতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে-এমন কি মোবাইলে রাত-দিন সেবা দিয়ে চলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার রাতে মণিরামপুর পৌরসভার তাহেরপুর গ্রামের করোনাক্রান্ত এক নারীর শ্বাস কষ্ট হলে তিনি মণিরামপুর সরকারী হাসপাতালে নেন। এ সময় রোগী শ্বাস কষ্টে সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠতে না পারলে মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ লিটন তাৎক্ষণিক রোগীর হাত ধরে হাসপাতালের উপরে উঠিয়ে বেডে পৌঁছে দেন।
এ ব্যাপারে ডাক্তার মুসাব্বিরুল ইসলাম রিফাত তাঁর ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন। পোস্টটি হুবহু উদ্ধৃত করা হলো ঃ আজকে তাহেরপুরে বাসায় চিকিৎসাধীন এক করোনা রোগীর হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে সেখানে উপস্থিত হলাম। কোনো অ্যাম্বুলেন্স পেলাম না, দশ পনেরো জন ভ্যান চালককে অনুরোধ করার পর অবশেষে একজন রাজি হল। হসপিটালের সিঁড়ি বেয়ে করোনা ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার সময় রোগীর হঠাৎ করে আবার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে প্রেসক্লাবের সভাপতি লিটন কাকা রোগীকে হাত ধরে সিঁড়িতে উঠান। সমকালীন সমাজে এ ধরনের ঘটনা একটা বিরল আর দুঃসাহসী দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, আমি অনুমতি না নিয়েই পিছন থেকে ক্যামেরাবন্দি করলাম।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিশেষ দ্রষ্টব্য:- সেবা করার জন্য আপনাকে সবসময় ডাক্তার হওয়া লাগবে না। করোনা রোগীর পাশে থাকুন, আমাদের পারস্পরিক ভাতৃত্ববোধ করোনাকে পরাজিত করবে।
মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারুক আহাম্মেদ লিটন-এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ মানুষের জন্যে। আমি মানবতাবোধে সাহায্য করেছি মাত্র। মানুষের বিপদে সকলের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের সকলের উচিত।