কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউপির সদস্য মো. সেলিম মোল্যা, চেয়ারম্যান আমিরু ইসলাম মনি, প্রকল্প সুপারভাইজার দেবাশিষ বিশ্বাস ও পিআইও শরীফ মো. রুবেলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইউপির গ্রামবাসির নিজ খরচে নির্মিত রাস্তার বিপরীতে গোপনে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য পরিচালিত সরকারি প্রকল্পের টাকা তুলে নেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় উপজেলার নওয়াগ্রামের আব্দুল্লাহ শেখসহ ৬জন ১৬ জুন কালিয়ার ইউএনওর নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। পরে দায় এড়াতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদি হয়ে প্রকল্প সভাপতির বিরুদ্ধে সার্টিকেট মামলা দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের খাজা মোল্যার বাড়ি থেকে বিল অভিমুখী একটি গ্রাম্য রাস্তা প্রায় ৩/৪ মাস আগে গ্রামবাসিরা নিজেদের অর্থে নির্মাণ করে। কিন্তু সরকার পরিচালিত অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য কর্মসূচির আওতায় প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাসের সহযোগিতায় গ্রামবাসির টাকায় নির্মিত নোয়গ্রাম ‘খাজা মোল্যার বাড়ি থেকে বিল অভিমুখী রাস্তা মাটি দ্বারা উন্নয়নের’ নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে কাজ না করেই প্রকল্প সুপারভাইজার দেবদাশ বিশ্বাসের সহযোাগিতায় বরাদ্দের টাকা তুলে লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাসের তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের কাজের প্রথম পর্যায় ৬৯ হাজার টাকা প্রকল্প সভাপতির অনুকুলে দেয়া হয়েছিল। উপজেলা ব্যাপী সকল ইউনিয়নে অতিদরিদ্রদের জন্য চলতি অর্থ বছরে সরকারের বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পের ১০/১৫ শতাংশ কাজও যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় প্রকল্প কমিটির সভাপতিরা করেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। দেবদাশ ও নির্বাচিত প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা কাজ না করেই এ সমস্ত টাকা ভাগাভাগি করে নেয় বলে একটি সুত্র থেকে জানা গেছে। ওই দাখিলকৃত ভূয়া প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সুত্রে জানা যায়, অতিদরিদ্রদের জন্য চলতি অর্থ বছরে সরকারের বাস্তবায়নাধীন কর্মসৃজন প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৪৮টি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়। ওইসব প্রকল্পের অনুকুলে ১ হাজার ২৩৯জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। আর প্রকল্প সমূহের অনুকুলে ৯৯ লাখ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ৯ জুন পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলার নওয়াগ্রামের গ্রামবাসির অভিযোগ দায়েরের পর সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ে। তখন তড়িঘড়ি করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মো. রুবেল প্রকল্প সভাপতি মো. সেলিম মোল্যার প্রথম পর্যায় তুলে নেয়া ৬৯ হাজার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য ১৬ জুন বিকালে ইউএনওর নিকট সার্টিফিকেট মামলা দায়ের করেন।
ওইসব প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপসহকারি প্রকৌশলী দেবদাশ বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার অজান্তেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। সরকারী টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।’ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শরীফ মো. রুবেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।