রংপুরের পীরগঞ্জে হস্তান্তরের আগেই ১টি ব্রীজে ভাঙ্গনের পাশাপাশি ফাটল দেখা দিয়েছে। উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধুলগাড়ী গ্রামে আখিরা নদীর মরা খালের উপরে র্নিমিত ওই ব্রীজে ভাঙ্গন ও ফাটলের ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালযের অধীনে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৮ ফিট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফিট প্রস্থে বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। মিঠাপুকুর উপজেলার বাসিন্দা তাজুল ইসলাম ওই ব্রীজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যাদেশ প্রাপ্ত হন। চলতি বছরের মার্চ মাসে ব্রীজ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হলেও সংযোগ সড়কের কাজ বাকি ছিল। গত শুক্রবার ব্রীজের দুই দিকে সংযোগ সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভেকু দিয়ে মাটি কেটে দেয়ার সময় গ্রামবাসি ব্রীজের উইং ওয়ালে ভাঙ্গন, গার্ডার, টপ স্লাব ও এবাটমেন্টে ফাটল দেখতে পেয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণে বাঁধা দেয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তড়িগড়ি করে গত শনিবার ভাঙ্গন ও ফাটলের স্থানে সিমেন্ট ও বালি দিয়ে বিষয়টি আড়াল করার চেষ্টা করলে গ্রামবাসীর প্রতিবাদের কারণে তা ভেস্তে যায়। ধুলগাড়ি গ্রামের বাসীন্দা মিজানুর রহমান, সাজু মিয়া, রুবেল, ফজল, আজিজুল ইসলাম, রাকিব মিয়া, আলম মিয়াসহ অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে গ্রামবাসী বর্ণিত স্থানে ব্রীজ নির্মাণের দাবি করে আসছিল। কুমারগাড়ী, খষ্টি, আলমপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ৫ সহস্্রাধিক মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করতে এবং ধুলগাড়ী গ্রামের মানুষের শত শত একর জমির ফসল পরিবহনের দুর্ভোগ লাঘবে মরা আখিরায় ওই স্থানে ব্রীজ নির্মাণ খুবই জরুরী ছিল। নদীর প্রস্থে অনুযায়ী ৭০/৮০ফিট ব্রীজ নির্মাণ না করে নদীর মাঝখানে ৩৮ফিট দৈর্ঘ্য ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। অথচ হাফ কিলোমিটার দুরত্বে পুর্ব ও পশ্চিমদিকে ২টি ব্রীজ রয়েছে যার দৈর্ঘ্য ৭০ থেকে ৮০ ফিটের উপরে। এত ছোট ব্রীজে নদীর গতিপথসহ সংযোগ সড়কের মেয়াদকাল নিয়ে সমস্যা হতে পারে অভিযোগ করলেও কাজ হয়নি। ব্রীজটি নির্মানের শুরুতে সি.সি ঢালাইয়ের সময় নদীর উপর স্তর থেকে ঢালাই শুরু করা হয়। গভীরতা করে মজবুত ভিত্তি দিয়ে সি.সি ঢালাই সম্পন্ন হয়নি। সংযোগ সড়ক নির্মানে নদীর পাড় কেটে সেই কাদাযুক্ত নরম মাটি ব্যবহৃত করা হয়েছে। শুরু থেকে এই ব্রীজে নি¤œ মানের কাজ ও নি¤œমান সামগ্রী ব্যবহৃত হলেও গ্রামবাসীর বাঁধা উপেক্ষা করে স্থানীয় চেয়ারম্যানের যোগসাজশে বলপ্রয়োগে ব্রীজটি নির্মিত হয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান দুলাল চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন বর্ষা মৌসুমের আগেই ব্রীজটি নির্মাণ সম্মন্নের জন্য অফিস ও ঠিকাদারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করেছি। ঠিকাদার তাজুল ইসলাম জানান, কোন নি¤œমান সামগ্রী ব্যবহৃত হয়নি, সংযোগ সড়ক নির্মান করতে গিয়ে অদক্ষ ভেকু চালকের কারণে ভেকু ব্রীজে ধাক্কা লাগায় এ ভাঙ্গনের ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ঠিকাদারের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন সংযোগ সড়কের উত্তর দিকের মাটি সরিয়ে দক্ষিন দিকে চাপ দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে। সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রয়োজন বোধে ব্রীজ ভেঙ্গে নুতন করে ব্রীজ নির্মাণ করা হবে। তিনি আরও বলেন এখনও চুড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়নি। অবশ্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে অফিসের জনৈক কর্মচারী জানান,তড়িঘড়ি করে রহস্যজনক কারণে চুড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে।