ভোটগ্রহণের দিন (২১ জুন) বোমা হামলায় নিহতের ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা রহস্যজনক কারণে প্রকৃত হামলাকারীদের আড়াল করতে বাদিকে না জানিয়ে আসামি করা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে মামলার প্রধান আসামি করে গ্রেফতারসহ নিহতের ভাইকে আসামি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নিহতের পুত্র ও মামলার বাদি নজরুল মৃধা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। জেলার গৌরনদী থানা সংলগ্ন একটি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিহতের আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার কয়েকশ’ গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন শেষে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী পুলিশের নাটকীয়তার প্রতিবাদে ও গ্রেফতারের পর জেলহাজতে প্রেরণ করা উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য ফিরোজ মৃধার নিঃশ্বর্ত মুক্তিসহ প্রকৃত বোমা হামলাকারী মন্টু হাওলাদার এবং তার সহযোগিদের গ্রেফতারপূর্বক ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে থানা ঘেরাও করেন। পরবর্তীতে থানার ওসি আফজাল হোসেন বিক্ষুব্ধদের দাবি অনতিবিলম্বে পূরণ করার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদি উপজেলার কমলাপুর গ্রামের নিহত মৌজে আলী মৃধার পুত্র নজরুল মৃধা (৩২) অভিযোগ করে বলেন, আমার দেয়া আসামিদের নাম বাদ দিয়ে ও আমাকে না জানিয়ে পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা মনগড়াভাবে মামলায় আসামি অর্ন্তভূক্ত করেছেন। এমনকি আমাকে এজাহারের কোন কাগজ দেয়াতো হয়নি বরং এজাহারটি পরেও শোনানো হয়নি। সোমবার (২১ জুন) দিবাগত রাতে আমার কাছ থেকে শুধু একটি স্বাক্ষর নিয়ে বলা হয়েছে মামলা রুজুর পর এজাহারের কপি দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ২২ জুন দুপুরে ওই মামলায় এক নাম্বার আসামি করে আমাদের (নজরুল) সমর্থিত বংশীয় চাচা ও বিজয়ী ইউপি সদস্য ফিরোজ মৃধাকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়। পরে আমরা মামলায় রহস্যজনকভাবে একাধিক আসামি অর্ন্তভূক্ত করার বিষয়ে জানতে পারি।
তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার বাদি নজরুল মৃধা বলেন, প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী মন্টু হাওলাদারের লোকজনের বোমা হামলায় যার (ফিরোজ মৃধা) চাচাতো ভাইকে হত্যা করা হয়েছে তাকে একটি মহলের প্ররোচনায় পুলিশের ওই কর্মকর্তা মামলার এক নাম্বার আসামি করেছে। এ ছাড়া আরও কয়েকজনকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশ মামলায় আসামি করেছেন।
জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মারুফ হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ইউপি নির্বাচনে (২১ জুন) উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ইউপি সদস্য প্রার্থী মন্টু হাওলাদারের পক্ষে এক যুবক জাল ভোট দিতে গিয়ে আটক হন। এনিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জেরধরে প্রতিদ্বন্ধী ইউপি সদস্য প্রার্থী ফিরোজ মৃধার সমর্থকদের ওপর বোমা হামলা চালায় মন্টু হাওলাদারের সমর্থকরা। বোমার আঘাতে ফিরোজ মৃধার সমর্থক ও চাচাতো ভাই মৌজে আলী মৃধা নিহত হয়।