রংপুরের পীরগঞ্জে এতিম এক মহিলা কে ভিটামাটি ছাড়া করতে হয়রানি মূলক ৪ টি মামলা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ যেন বিড়ালের কাঁধে মহিষের যোয়াল ? ঘটনাটি ঘটেছে পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামে। মামলার সুত্র ও এলাকাবাসী জানায়, উক্ত গ্রামের মৃত: আনিছ উদ্দিনের এক পুত্র আজাদ, দুই কন্যা আমেনা ও রাজেকা বেগম। বাবার মৃত্যুর পরে থেকেই রাজেকা বেগম বাবার বাড়ীতে স্বামীসহ ঘর জামাতা হিসেবে বাস করেন। পলাশবাড়ী মৌজার জেএল নং ৭২, ৯১ দাগে ২২ শতক জমির মালিক দুই বোন এক ভাই। ভাই আজামের মৃত্যুর পর রাজেকা বেগম তার স্বামীসহ ওই ভিটেমাটিতেই থাকেন। পার্শ্ববর্তী রতেœশ্বরপুর গ্রামের মৃত: আব্দুল বারী মিয়ার পুত্র বক্কর আলী, মোকলেছার ও চাচাত ভাই ছামাদ গং এর যোগসাজসে উক্ত দাগে সাড়ে বারো শতক জমি বিগত ১৯৮২ ইং সালে রাজেকা বেগম কে নাবালক দেখিয়ে বক্কর আলীর পিতা আব্দুল বারী মিয়ার নামে জাল দলিল তৈরী করে রাখেন। বিগত ১৯১৫ইং সালে এ ঘটনা প্রকাশ পায়। ২০১৬ ইং সালের ১৫ জুন তারিখে রাজেকা বেগমের চরম অভাব অনাটনের কারণে মাটির ঘর ভেঙে যায়। গ্রামবাসিদের সহযোগিতা নিয়ে ভেঙ্গে যাওয়া ঘর মেরামতকাজ শুরু করায় দুই গ্রামের দেওয়ানি বক্কর আলী ও তার পরিবারের লোকজন বাঁধা দেয়। অসহায় মহিলা গ্রামবাসির সহযোগিতা নিয়ে পীরগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেন। পরে থানা পুলিশ উক্ত রাজেকা বেগমের কাগজ পত্র দেখে পরামর্শ দেয়ায় পীরগঞ্জ সিনিয়র জজ আদালত এ একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং ৯০/২০১৬ । বর্তমানে উক্ত মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ঘটনায় আসামি পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত মহিলাকে হয়রানি করতে গিয়ে আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীসহ ১ ডজন ব্যাক্তিকে আসামি করে আদালতে পৃথক ৪ টি মামলা দায়ের করে। গ্রামের অনেকেই জানেন না তারা কোন মামলার আসামি ? এছাড়াও আসামিদের অনেকেই ওই গ্রামের বাস করেন না। অথচ তাকেও আসামী করা হয়েছে। এ ধরনের নজীরও রয়েছে। এদিকে ৪ টি মামলা চালাতে গিয়ে অসহায় রাজেকা বেগম গরু ছাগল হাঁস মুরগী আবাদি জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে অন্যের বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে তিনি মামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। রাজেকা বেগম বলেন- আমি বাড়িতে আম কাঠালের গাছ লাগিয়েছি সেই গাছ থেকে বক্কর আলী ফল ভোগ করতে বাঁধা দেয়। আমার স্বামী সহজ সরল বলে আমাদেরকে কয়েক বার মারপিট করেছে। তিনি আরও বলেন গ্রামের মানুষ আমার পক্ষে কথা বললেই তাদেকে আসামি বানিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে। আমি আদালতের কাছে বিচার চাই। সংশ্লিষ্ট কুমেদপুর ইউপির চেয়ারম্যান মোশফাক হোসেন ফুয়াদ চৌধুরী বলেন রাজেকা বেগম এতিম এবং অত্যন্ত অসহায়। বক্কর আলীর সাজানো মামলার কারণে সহায় সম্বল বিক্রি করে তিনি এখন ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়েছেন। ওই ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালেক মিয়া বলেন তার ক্ষমতা থাকাকালীন সময় বক্কর আলী রাজেকা বেগমের জাতীয় পরিচয় পত্র ডুপ্লিকেট করে আদালতে জমা দিয়েছে। সে কাগজ তার হাতে ধরাও পড়েছিল। গ্রামবাসি ও সচেতন মহল এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।