খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় নানা অপরাধী সংঘবদ্ধ চক্র তৎপর। একের পর এক ঘটে চলেছে লোমহর্ষক ঘটনা। ঘটে চলেছে আইন শৃংখলার অবনতি। চিহ্নিত অপরাধীরা নানাভাবে নানা অপরাধ ঘটিয়েই চলেছে।এ সব অপরাধীরা কখনও দিঘলিয়া উপজেলার অভ্যন্তরে কখনও দিঘলিয়া উপজেলার বাইরে গিয়ে নানাবিধ অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে।
এলাকাবাসী ও আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, দিঘলিয়া উপজেলায় নানা অপরাধী চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা বিচ্ছিন্নভাবে নানা অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। তারা দিঘলিয়া উপজেলার ভেতরে ও বাইরে অপরাধ কর্মকা- সংঘঠিত করছে। তাদের উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধি করা। এসব অপরাধীরা নানা নেশা দ্রব্যের আমদানি ও বেচাকেনা করছে। নানা জনপদে গোপন আস্থানায় বা বাড়িতে জুয়ার আসর বসিয়ে টাকা আয় করছে। ফরমাইশ খানার মামুন হত্যা, দেয়াড়া কলোনি এলাকার খলিলুর রহমান হত্যা বারাকপুর ইউনিয়নে বারবার হামলার ঘটনা, মোটরসাইকেলসহ দেশী-বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার, সেনহাটি ও গাজীরহাটে লোমহর্ষক সংঘর্ষ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অপহরণ ঘটনার সাথে জড়িত মাস্টার মাই- কানা মেহেদী, রিপন ও রাজের কর্মকা- গুলোও এমনি ঘটনা বলে জানা যায়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অপহরণ ঘটনার সাথে জড়িত ৪ অপরাধী গ্রেফতার হলেও পুলিশের ভাষায় মাস্টার মাই- রাাজ ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। ফরমাইশ খানা মামুন হত্যার মাস্টার মাই- কানা মেহেদী ও রিপন ঘটনার পর থেকে আত্মগোপন করে আছে। সম্প্রতি সেনা দপ্তরে ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদানকারী দুই প্রতারক গ্রেফতার হয়েছে দিঘলিয়া থেকে। ঢাকা ও যশোরের ব্যাংক থেকে চেক জালিয়াতি করে টাকা তুলতে গিয়ে ধরা পড়েছিল দিঘলিয়া উপজেলার এক চেক জালিয়াতি চক্রের সদস্য। শক্তিশালী পৃষ্টপোষকের কারণে দ্রুত ছাড়াও পেয়ে গিয়েছিল বলে সূত্র জানায়। বাবুর মত ঘুরেফেরা আর রাতের বলা অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ যাদের পেশা। ফরমাইশখানা দুই ব্যক্তি খুলনা সেনানিবাসে সেনাবাহিনীতে ভর্তি হতে গিয়ে জালিয়াতি চক্রের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। গত ৮ এপ্রিল একটা চিহ্নিত সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংঘবদ্ধ চক্র চন্দনীমহল জিয়াউর রহমানের মাছের ঘেরে তাকে মারার জন্য চড়াও হয়।তার চিৎকারে এলাকাবাসী একত্র হয়ে এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।এরই জের ধরে ওই সন্ত্রাসী চক্র গত রোববার গভীর রাতে জিয়াউর রহমানের মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে। যার ফলে জিয়াউর রহমানের ঘেরের আনুমানিক ৩ লাখ টাকার মাছ মারা যায়। জিয়াউর রহমান এ ব্যাপারে দিঘলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেনহাটি পূর্বপাড়া নিবাসী ডাঃ সৈয়দ আবুল কাশেমের বাড়িতে ৩ দিনের ব্যবধানে দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলেও আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থা অজ্ঞাত কারণে নিরব ভূমিকা পালন করে। সেনহাটি ঋষী পাড়া নিবাসী আবদুস সালামের বাড়িতে জানালা ভেঙ্গে চোর ঘরে ঢুকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে অবাধে পালিয়ে যায়। সম্প্রতি কয়েকটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লোমহর্ষক চুরি মানুষকে ভাবিয়ে তুলছে। দিঘলিয়ায় সংঘটিত জনৈক আসলাম বিশ্বাস অপহরণ মামলার আসামিরা ও পৃষ্ঠপোষকরা এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় পথের বাজার স্কুলের পাশে জনৈক ব্যক্তির নির্মানাধীন ভবনের রড চুরি ও পরে উদ্ধার হয়। কারা অপরাধী এবং কারা এদের পৃষ্ঠপোষক তা সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের তদন্তে এনে এদের কঠিন বিচারের আওতায় আনা দরকার বলে এলাকার বিজ্ঞ মহল মনে করেন। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এসব অপরাধী চক্রের নানা অবস্থানে শক্তিশালী পৃষ্ঠপোষক রয়েছে। যে কারণে এরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হলেও আইনের নানা ফাঁক ফোঁকরে ও পৃষ্ঠপোষকদের তদবিরে ছাড়া পেয়ে আবার বেরিয়ে এসে নতুন করে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।
সম্প্রতি এ উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের লাখোহাটি গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্র শিশু তামিম (৭) হত্যা খুলনার আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থাকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ অবুঝ শিশু হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করতে খুলনা পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহল সহ আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থা জোর তৎপরতা অব্যহত রেখেছে। দিঘলিয়া থানার পুলিশ জানায়, অপরাধীরা যতই শক্তিশালী হোক এবং যেখানে থাকুক না কেন পার পাবে না। তারা খুব তাড়াতাড়ি গ্রেফতার হবে।