ভৈরবে একটি প্রভাবশালী চক্র মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিমুলকান্দি ইউনিয়নের ছোট রাজাকাটা গ্রামের আঃ মালেকের পুত্র মৃত মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের ১১ শতাংশ জায়গা ( বসত বাড়ি ) তারই চাচাতো ভাই উসমান, কবির, তালেব, মনির ও জাকির হোসেন জোর পূর্বক দখল করেছে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানাযায় ,বিগত ৬৩ বছর আগে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের পিতা আঃ মালেক ও তারই ভাই সুরত আলী ছোট রাজাকাটা গ্রামের ছোবান মিয়ার কাছ থেকে ৩৩ শতাংশ জমি কিনে সাব কাওলা রেজিষ্টি করেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা জীবনের তাগিদে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘদিন পরে বাড়িতে এসে দেখেন তার বাবা ও চাচার ক্রয়কৃত জমি দখল করে নিয়েছে তারই চাচাতো ভাইয়েরা। এ নিয়ে এলাকায় দীর্ঘ ২০/২৫ বছর যাবৎ জমি ফিরে পেতে এলাকায় একাধিক শালিসী বৈঠক করে ও কোন সুরাহা হয়নি। অবশেষে গত কিছুদিন আগে রোগে-শোকে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের মারা যান।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায় মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে বিশুদ্ধ পানির কোন টিউবওয়েল বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। পাশের বাড়ি থেকে খাবার পানি আনতে হয়। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের স্ত্রী ও ২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। এর মধ্যে ২ মেয়ে অন্যত্র বিয়ে হয়ে গেলেও স্ত্রী ও ১ পুত্র বাড়িতে থাকে। এলাকাবাসিরা জানায়, মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়েরের স্ত্রী, পুত্র অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। তাদেও জমি না থাকায় বাড়িতে টিউবওয়েল ও স্যানিটেশন নেই। অন্যের বাড়ি থেকে বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবহার করতে হয়। অথচ তাদের জমিটা যদি উদ্ধার করা যেতো তাহলে এত কষ্ট করতে হতোনা।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধার পুত্র আবুল হাসান রানা, কন্যা আমেনা খায়ের সোমা, আফরোজা খায়ের ও স্ত্রী আয়েশা খায়ের জানান, তাদের ক্রয়কৃত জমি উসমান, কবির, তালেব, মনির ও জাকির হোসেন জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জীবিত থাকাকালীন এলাকায় একাধিকবার শালিসী বৈঠক করেছে। কিন্তু বৈঠকের রায় অমান্য করে প্রতিপক্ষরা তাদের জমি জোর পূর্বক দখল করে রেখেছে। এ শোকে মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। মারা যাওয়ার পর প্রতিপক্ষরা তাদেরকে নানাভাবে নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে ভৈরব সহকারি কমিশনার ( ভ’মি),ভৈরব থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে ও কোন কাজ হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযোগের প্রেক্ষিতে উসমান, কবির, তালেব, মনির ও জাকির হোসেন এর বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে পরিবারের নারী সদস্যরা ও কেউ কথা বলতে রাজি হননি। এমনকি তাদের মোবাইল ফোন নাম্বারে কল করে ও কাউকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে একই গ্রামের সাদেক মিয়া জানান, মুক্তিযোদ্ধার জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ায় একাধিকবার শালিসী বৈঠকে জমি ফেরত দেয়ার রায় হয়েছে। পরে রায় বাস্তবায়ন হয়নি।
এ বিষয়ে শিমুলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আঃ আজিজ জানান, জায়গা-জমির বিষয়ে একাধিকবার শালিসী বৈঠকে মিমাংসার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এক পক্ষ রায় মানলেও অন্য পক্ষ মানেনা। তবে শীঘ্রই জমি-জমার বিষয়টি মিমাংসার জন্য শালিসী বৈঠক করে সমাধান করা হবে।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা জানান, মুক্তিযোদ্ধার জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ পায়নি। তারপর ও বিষয়টি যেন স্থানীয়ভাবে সুরাহা হয়। সেজন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করা হবে।