কঠোর লকডাউনের ৫’ম দিনে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন তৎপর থাকলেও জনগণ উদাসিন। সোমবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে অনেককেই অহেতুক ঘোরাাফেরা করতে দেখা গেছে। অনেকে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানের একটি সাটার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তবে এদের অনেকেই ভ্রাম্যমান আদালতের মুখোমুখি হতে হয়েছে। নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্টে সেনাবাহিনী লকডাউন বাস্তায়নের পাশাপাশি জনগণের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেছেন। রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় সেনাবাহিনীর টহল দল ৬ টি, র্যাবের টহল দল ১টি এবং বিজিবি টহল দল ১ টি, আনসার বাহিনীর ১ টি দল টহল দিচ্ছে। নগরীর ১০টি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে মটর সাইকেলসহ যানবাহন আটকিয়ে আগমনের কারণ সন্তোষজনক না হলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন প। সকাল থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব ও বিজিবি নগরীতে টহল অব্যাহত রেখেছে। নগরীর বিভিন্নস্থানে ৫জন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে নগরীর সেন্টাল রোড, জিএলরায় রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অনেকে দোকানের এক ঝাঁপ খুলে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার কর্তৃক ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন নিশ্চিতকল্পে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানা
পুলিশ সোমবার রংপুর শহরের সকল গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় টহল, অভিযান পরিচালনা, জরুরী প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনদের মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, মাস্ক বিতরণ ও জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে।# ৫-৭-২১
রংপুরে আরও ১৫ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৬৭৬
এফএনএস (মমিনুল ইসলাম রিপন; রংপুর) : রংপুর বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে একদিনে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এর মধ্যে দিনাজপুর জেলার চারজন, রংপুরের তিনজন, ঠাকুরগাঁওয়ের তিনজন, লালমনিরহাটের দুইজনসহ পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রামও গাইবান্ধার একজন করে রয়েছেন। এনিয়ে পাঁচদিনে বিভাগে করোনায় প্রাণ হারাল ৬৩ জন।
সোমবার (০৫ জুলাই) দুপুরে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আবু মো. জাকিরুল ইসলাম তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, একই সময়ে বিভাগে নতুন করে ৬৭৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে দিনাজপুরের ২৬৭, ঠাকুরগাঁওয়ের ১৩০, রংপুরের ৮৫, কুড়িগ্রামের ৪৮, পঞ্চগড়ের ৪৭, গাইবান্ধার ৩৭ জনসহ নীলফামারী ও লালমনিরহাট জেলার ৩১ জন করে রয়েছে। বিভাগে করোনা শনাক্তের হার ৩৪ দশমিক ২৩। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৩৪জন।
স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (০৪ জুলাই) বিভাগের আট জেলার ১ হাজার ৯৭৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৬৭৬ জন করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। একই সময়ে বিভাগের হিলি ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আরও চারজন দেশে ফিরেছেন।
করোনাভাইরাস শনাক্তের শুরু থেকে রোববার পর্যন্ত রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ২৮ হাজার ৯২৪ জন শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৫৮২ জন।
এর মধ্যে দিনাজপুুর জেলায় করোনাভাইরাসে ৯ হাজার ৩৫৪ জন আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ২০৬ জনে রয়েছে। রংপুরে ৬ হাজার ৫৩৭ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে ১১৮ জনের। ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ হাজার ৮৬৫ জন আক্রান্ত ও ১০৩ জনের মৃত্যু, গাইবান্ধায় ২ হাজার ৩২৯ জন আক্রান্ত ও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া নীলফামারীতে ২ হাজার ৯ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৩৯ জনের, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৯৬৮ জন আক্রান্ত ও ২৯ জনের মৃত্যু, লালমনিরহাটে ১ হাজার ৬৩৫ জন আক্রান্ত ও ৩২ জনের মৃত্যু এবং পঞ্চগড় জেলায় ১ হাজার ২২৭ জন আক্রান্ত ও ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আবু মো. জাকিরুল ইসলাম। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিভাগের নির্দেশনা মেনে চলার বিকল্প নেই। অন্যথায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।