খুলনা পাইকগাছায় এক প্রতারকে যশোর গোয়েন্দা পুলিশ আটক করেছে। ছদ্ধবেশী প্রতারক চা দোকানী প্রদীপ ফেসবুকে ফেক আইডি মাধ্যমে ভয়ঙ্কর প্রতারনার ফাঁদ পেতে বিভিন্নজনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার সীমান্তবর্তী তালা উপজেলার ঘোষনগর তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় আত্মসাৎকৃত নগদ ১০লাখ ৯৭হাজার টাকা ও বিভিন্ন ডকুমেন্টস উদ্ধার করা হয়েছে। যশোর জেলা পুলিশের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রদীপ ঘোষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেকে (soumodip.ghosh.775) নামে পরিচয় দিয়ে একটি ফেইক আইডি খুলে। এ সময় সে নিজেকে জার্মান প্রবাসী পরিচয় দিয়ে জমি ক্রয়ের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রীতা রাণী দাস এর নিকট থেকে গত জুন মাসে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে নগদ, বিকাশ ও চেকের মাধ্যমে মোট ২০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। এ সময় প্রদীপ ঐ শিক্ষিকার কাছ থেকে জমির দলিল তৈরীর নামে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজের ৩ কপি ছবি, স্বাক্ষরযুক্ত নন জুডিশিয়াল ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্প, ৩টি চেক গ্রহণ করে। এরপর ঐ শিক্ষিকা প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে আত্মসাৎকৃত টাকাসহ অন্যান্য উপকরণগুলি উদ্ধারে ব্যার্থ হয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। যার নং-৮, ৩জুলাই। এরপর যশোর পুলিশ সুপার মামলাটির তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখায় অর্পন করলে গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা ইনচার্জ মামলাটির তদন্তভার এসআই (নি.) শামীম হোসেনের উপর অর্পন করেন। এরপর পুলিশ সুপারের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় ও জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তা ইনচার্জ সোমেন দাস এর তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (নি:) রুপম কুমার সরকারের (পিপিএম) নেতৃত্বে এসআই মো. মফিজুল ইসলাম, (পিপিএম), এসআই চন্দ্র কান্ত গাইন, এসআই মো. শামীম হোসেন সঙ্গীয় ফোর্সসহ গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম প্রদীপের অবস্থান শনাক্ত করে রোববার (৪জুলাই) খুলনার কপিলমুনি ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সীমান্ত ঘোষ নগরে অভিযান চালিয়ে প্রদীপ কুমার ঘোষ ওরফে সঞ্জিত ওরফে সৌম্মদীপ ঘোষ ওরফে সুশান্ত ঘোষ (৫১) কে তালার ঘোষনগরস্থ নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেন। তিনি ঘোষনগরের সুবোধ ঘোষের ছেলে। এ সময় পুলিশ তার হেফাজতে থাকা নগদ ১০ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, বাদীর স্বাক্ষর সম্বলিত ব্লাঙ্ক চেক, ব্লাঙ্ক নন-জুডিশিয়াল ৩টি ষ্ট্যাম্প, এনআইডি কার্ডের ২টি ছায়ালিপি, ৩কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, বিভিন্ন দলিলের ছায়ালিপি, ৩টি মোবাইল সেট (ফেসবুক আইডি ব্যবহৃত ও বিকাশ নাম্বার) সম্বলিত, প্রদীপের ১টি পাসপোর্ট, সাড়ে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার যার আনুমানিক মূল্য ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে। প্রসঙ্গত, প্রদীপ ঘোষ দীর্ঘ দিন যাবৎ পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি বাজারে প্রথমত চায়ের দোকান ও পরে ফার্স্ট ফুডের ব্যবসা করতো। এ সময় সে কপিলমুনি সদরের পালপাড়ার অনিমেশ মন্ডলের বাড়িতে ভাড়াটিয়া ছিল। সম্প্রতি সে কপিলমুনির এক ওষুধ ব্যবসায়ীর ঘোষনগরস্থ প্রায় ৮শতক জমি ক্রয় করে সেখানে বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করেছেন। স্থানীয়রা জানান, তার প্রকৃত বাড়ী ভারতে এবং মাদক বিকিনকির সাথেও জড়িত। দীর্ঘদিন আগে কপিলমুনি এসে পার্শ্ববর্তী তালার জেঠুয়া এলাকায় বিয়ে করে।