খুলনার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ ও শিবসা নদ-নদীর চরভরাটি জমি দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে প্রভাবশালী নেতা সমীরণ সাধুর ছত্রছায়ায় ইয়ামিন ও আবদুস সালাম গং কপোতাক্ষ নদের চর ভরাটি জমি দখল কার্য চালাছে। সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার কপোতাক্ষ নদ হিতামপুর মৌজায় দখল মহোৎসব চলছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনে নিকট বিভিন্ন ব্যক্তির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হলে প্রশাসন চর ভরাটী সরকারি সম্পত্তি সীমানা নির্ধারণ করে লাল ফ্লাগ লাগিয়ে দিয়েছেন। সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে দখলদাররা নদ-নদীর চরভরাটি জমি দখল করেছে। ইতোমধ্যে গত ৪ জুলাই উপজেলা সদরে শিবসা নদীর চরভরাটি জমিতে বাঁধের কাজ শুরু করেন উপজেলার লস্করের কড়-লিয়া এলাকার জনৈক চন্ডি চরণ বিশ্বাস। এর আগে কপোতাক্ষ নদের পাইকগাছার গদাইপুরের হিতামপুর এলাকায় চরভরাটি প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বিঘা জমিতে বাঁধ দিয়ে দখল প্রক্রিয়া শুরু করেন, রাড়-লীর জনৈক আবদুস সালাম। দখলদাররা সেখানকার ১নং খাস খতিয়ানের ৯৫১ দাগের বোয়ালিয়া এলাকার চরভরাটি প্রায় ৩০/৩৫ বিঘা জমিতে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে দখলে নিয়েছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাইকগাছা সদরের শিবসা চরভরাটি জমিতে দু’ফায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)। উপজেলার রাড়ুলী গ্রামের মো. মোকছেদ গাজীর ছেলে আবদুস সালাম চরভরাটি জমিতে বাঁধ-বন্দি করতে থাকলে হিতামপুর গ্রামের আক্তারুল বাদী হয়ে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি উপজেলা সার্ভেয়ার ও কানুনগুহকে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের কথা বলেন। অভিযুক্ত সালাম গাজীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিংড়ি চাষের জন্য জলমহলের ইজারা গ্রহণে তিনি একটি আবেদন করেছেন। এ ছাড়া প্রভাবশালী সমীরন সাধুর নির্দেশে কাজ করছেন ও বাঁধের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরাও সমীরণ সাধুর নির্দেশে কাজ করছেন বলে জানান। গত ৪ জুলাই রোববার সকাল ১০ টার দিকে উপজেলা সার্ভেয়ার ও কানুনগুহ ঘটনাস্থলে গিয়ে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পান। এ সময় তারা জনৈক ইয়ামিন নামে একজনকে ভূমি অফিসে নিয়ে যান। কানুনগো বলেন, এসিল্যান্ড স্যারের নির্দেশে তিনি তাকে ডেকে নিয়েছিলেন এবং তার নির্দেশেই তাকে ছেড়ে দিয়েছেন। এরপর গত ৫ জুলাই দখলদাররা ফের সেখানে বাঁধের কাজ চলমান রেখেছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারিয়ার হক বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, মঙ্গলবার আমাদের লোক সেখানে গিয়ে সরকারি সম্পত্তির সীমানা জরিপপূর্বক সরকারের দখলে নিয়ে নিবেন। এ ছাড়া আরো যারা সরকারি সম্পত্তির অবৈধ দখল নিয়েছেন আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ হলে তাদেরকেও পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সমিরন সাধু প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার ছলে বলেন, এই জমি আমার দরকার না, কেউ হয়তো আমার নাম ব্যবহার করতে পারে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, নদী হলো আমাদের প্রাণ, অবশ্যই নদী রক্ষায় সার্থে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদীর চরভরাটি জমি সরকারের। তা রক্ষা করার দায়িত্ব অবশ্যই প্রশাসনের। আমরা দ্রুতই ব্যবস্থা নেব।