যশোরের অভয়নগর উপজেলার ধোপাদী গ্রামে চোর চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন করেছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার ধোপাদী গ্রামের উলরবটতলা বিল সংলগ্ন সড়কে ঘের ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর ব্যানারে চোর চক্রের নাম উল্লেখ করে এ মানববন্ধন করেন। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার চোর চক্রের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে অভয়নগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
ব্যানারে উল্লেখ করা চোর চক্রের সদস্যরা হলেন- ধোপাদী গ্রামের মিজানুর মোল্যার ছেলে আরজ মোল্যা ও ফিরোজ মোল্যা, একই গ্রামের হামিদ সরদারের ছেলে ওলিয়ার সরদার, ছামাদ মোল্যার ছেলে মিজানুর মোল্যা ও মিজানুর মোল্যার ছেলে সুমন মোল্যা।
ঘন্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাখেন, মৎস্য ঘের ব্যবসায়ী মো. আজিজুর রহমান, কুদ্দুস শেখ, আকরামুজ্জামান, আবদুর রহিম ফকির, আজি সরদার, ইকরাম ফকির, বাবলু ফকির, সঞ্চয় মন্ডল, মহিন গাজী, কামরুল হোসেন, জাকির হোসেন, রবিউল ইসলাম, সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম মজুমদার, মফিজুর রহমান দপ্তরী, লুৎফর রহমান মজুমদার, ইসমাইল গাজী প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, প্রদিপ দাস, মোস্তফা বিশ্বাস, ইউনুচ মজুমদার, শাহিন গাজি, রবি সরদার, হাসান সরদার, নিমর্ল দেবনাথ, তবিবুর মোল্যা, রাজু সরদার সহ আনুমানিক ২ শতাধিক গ্রামবাসী। অংশগ্রহণকারীদের হাতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা, চোর চক্র ও হোতাদের বিচারসহ বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন ছিল।
বক্তারা বলেন, ভবদহ অঞ্চল হওয়ায় এ বিলে কোন প্রকার ফসল করা সম্ভব হয় না। ২০০১ সালে জমি মালিকদের সমন্বয়ে মৎস্য ঘের করে মাছ চাষ শুরু করা হয়। গত ৫ বছর ধরে গ্রামের একটি চিহ্নিত চোর চক্র রাতের আঁধারে ওইসব মৎস্য ঘেরে বিষ প্রয়োগ, কারেন্ট জাল ও ফাঁদ পেতে মাছ চুরি শুরু করে আসছে। পরবর্তীতে ওই চক্র ঘেরে মজুদ করা খাদ্য সামগ্রী ও বিভিন্ন মেশিনের তেল চুরি শুরু করে। এ ব্যাপারে স্থানীয় পর্যায়ে বার বার বিচার-শালিস করা হলেও চোর চক্রের অন্তরালের হোতাদের কারণে কোন সুষ্ঠ সমাধান হয় না। যে কারণে তারা বেপরোয়া হয়ে রাতে ও দিনে চুরি করতে শুরু করে। বাঁধা দিতে গেলে চোর চক্রের পক্ষ নিয়ে এগিয়ে আসেন ধোপাদী গ্রামের মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে বিতর্কিত বিএনপি কর্মী একাধিক মামলার আসামি এস এম রিপন।
বক্তারা আরো বলেন, এই রিপনের মদদে গত ৩ জুলাই শনিবার সঞ্জয়ের ঘেরের কাজ শেষ করার পর বশিরের কালভার্ট নামক স্থানে রাখা একটি এস্কভেটর থেকে আনুমানিক ১শ’ ৫০ লিটার তেল চুরি করা হয়। পর দিন এ বিষয়ে ঘের ব্যবসায়ীরা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসে চোর চক্রের নাম। গ্রামবাসীর উপস্থিতিতে তেল চুরির কথা স্বীকার করে চোর চক্র। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চক্রের হোতারা ঘের মালিক ও এস্কেভেটর চালক আবদুর রহিমকে ভয়ভীতি ও খুনের হুমকি দেয়। বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে হোতাসহ চোর চক্রকে আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়াররি প্রদান করেন। এ ব্যাপারে এস্কেভেটর চালক আবদুর রহিম জানান, তেল চুরি ধরা পড়ার পর চোর চক্রের সদস্যরা তাকে ভয়ভীতি দেখায় এবং এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে এস্কেভেটর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। তিনি এই চক্রের হোতাসহ সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।