নেত্রকোনার দুর্গাপুরে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেছেন সেই মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাত রিকসা চালক তারা মিয়া। করোনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ধরে রাখার উদ্দেশ্যেই এই শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ করেছে সে।
রিকশা চালিয়ে উপার্জিত অর্থের অর্ধেক অংশ দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সে এ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তবে করোনার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় কিছুটা বাধা পরলেও থেমে নেই তার কার্যক্রম। এখন শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি ছুটে যাচ্ছে।
শুক্রবার বিকেলে সদর ইউনিয়নের আদিবাসী অধ্যুষিত দেবথৈল গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ৪০ জন শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন তিনি। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সংক্রমণ থেকে দূরে রাখতে মাস্ক পড়িয়ে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে সে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের মাঠে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করতে একটি ফুটবল আদিবাসী শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়।
এর আগে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের গরম থেকে রক্ষায় একটি ফ্যান ও খেলাধুলার জন্য একটি ফুটবল শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয় সে। তাছাড়াও করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ায় মানুষকে সচেতন করতে শুরু করেছেন সচেতনতা মূলক প্রচার প্রচারণা।
যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়ানোর সময় রাস্তায় রিকশা থামিয়ে মাক্স বিহীন মানুষদের মাঝে নিজের কষ্টের টাকায় কিনা মাস্ক হাসি মুখে বিতরণ করছে সে।
বিগত আট বছর ধরে উপজেলা ৪০টির ও বেশি মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা যেন তার নেশা।
মানবিক রিকশাচালক তারা মিয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনা একটা আগ্রহ ছিলো। কিন্তু টাকার অভাবে আমি তখন পড়াশোনা করতে পারিনি। এখন আমার টাকা আছে কিন্তু পড়ালেখা করার সময় নেই। যারা টাকার অভাবে পড়াশোনা করতে পারে না আমি তাদের মাঝে বই, খাতা, কলম সহ বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী যথাসাধ্য চেষ্টা করছি দেয়ার। তাদের মাঝে এই গুলো দেয়া এখন আমার একটা ভালো লাগার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের কাছে যদি এই সামগ্রীগুলো পৌঁছাতে না পারি তাহলে অনেক কষ্ট লাগে। আমি চাই কোন শিক্ষার্থীই যেন টাকার অভাবে পড়ালেখা বন্ধ না হয়ে যায়।