প্রায় ৬ মাস ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে একটি সেতু। সংস্কার না হওযায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছে এলাকাবাসি। সেতুটিতে লোকজন চলাফেরা জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য বাঁশের পাটাতন তৈরি করে দিয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারছেন না। যানবাহণগুলো কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছে। অথচ সেতুটি নির্মাণে সংশ্লিষ্ঠ কতৃপক্ষের কোন নজর নেই।
গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের পাশাপাশি দুটি গ্রাম আনারপুর-মেহেরপুর । দু’ই গ্রামের সংযোগস্থল রাস্তার মধ্যে রয়েছে সেতুটি। এ সেতু দিয়ে গ্রামের লোকজন ছাড়া বিভিন্ স্থানের লোকজন চলাফেরা করে। বিশেষ করে কৃষি পরিবহণ চলাচল করে বেশি। এছাড়া মেহেরপুর গ্রামে ভূমি কার্যালয় থাকায় বিভিন্ন এলাকার লোকজন এ সংযোগ রাস্তাটির উপর দিয়ে চলাচল করে থাকে। কিন্তু সংযোগ রাস্তার উপর নির্মিত সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। নারী,শিশু ও বয়স্কজনদের চলাফেরায় প্রচুর সমস্যা হচ্ছে। ওই গ্রাম দুটিসহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি গ্রামের লোকজন বেশ কয়েক কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে যাচ্ছেন। কৃষকগন তাদের কৃষিপন্য নিয়ে খুব বেকায়দায় রয়েছে।
ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, সেতুটি ভাঙ্গা ৬ মাস অতিবাহিত হয়েছ। এখনও সেতুটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি কর্তৃপক্ষ। চলতি বোরো ধান উঠানে উঠানোর সময় কৃষকদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। ধান বহনকারী গাড়ীগুলো কয়েক কিলোমিটার ঘুরে আসার কারণে অতিরিক্ত গাড়ির ভাড়া দিতে হয়েছে।
আনারপুর গ্রামের কভিদ আলী বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এলাকার ৪/৫ টি ওয়ার্ডের প্রায় ৫ হাজার লোকের চলাফেরায় সমস্যা হচ্ছে। কৃষকরা জমিতে কৃষি উপকরণ নিয়ে যেতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ভারী যানবাহন নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা যাচ্ছে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য ভাঙ্গা সেতুটির উপর মানুষ চলচলের জন্য বাঁশের পাটাতন তৈরি করে দিয়েছে। নতুন করে সেতুটি তৈরির দাবি জানান।
ওই এলাকার ইউপি সদস্য মোকসেদুল ইসলাম বলেন, সেতু ভাঙ্গার বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) গত ৩/৪ দিন পূর্বে সংযোগ সড়কটি নির্মাণের জন্য রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। সড়কটি দ্রুত নির্মাণ কাজ হবে বলে তাকে জানিয়েছেন। সড়কটি নির্মান হলে সেতুটি অচিরেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, সেতুটি নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সুলতানুল ইমাম বলেন, তার কার্যালয়ের একটি দল সড়কটি পরিদর্শন করে প্রকল্প প্রস্তুত করেছে। বরাদ্দ পেলেই রাস্তা ও সেতুটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রহনপুর ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের ভোগান্তির অভিযোগ
এফএনএস (মোঃ আল মামুন বিশ্বাস; গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ) : রহনপুর ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে জন্ম সনদপত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও নাগরিকদের ভোগান্তিসহ অফিস না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইউপি সচিব সজিব কুমার সাহা ও হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোসাঃ মারুফা খাতুন গত ৭ দিন অনুপস্থিত আছে এ অভিযোগে স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জ বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আল শফি আনসারী। তবে তার বিরুদ্ধে আণিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সচিব সজিব কুমার সাহা।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ওই ইউনিয়নের কাজিগ্রাামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, তিনি তার ভাগ্নিনা'র জন্ম সনদ নিতে ওই ইউপি সচিবের কাছে যায়। তার নিকট হতে ৪'শ টাকা করে দু'টিতে ৮'শ টাকা নেই।
মিরাপুর গ্রমের বাসিন্দা শাহীন আলম বলেন, তার বোনের জন্মসনদের কাগজ রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের আনতে যায়। ওই সময় ইউপি সচিব কয়েকদিন সময় লাগবে বলে তাকে ফেরত পাঠান। পরবর্তী তাকে নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকেন। তার কাগজপত্র হারিয়েছে গেছে বলে তাকে নতুন করে ফরমপূরণ করে জমা দিতে বলেন। তিনি নতুন ফরম দিয়ে আবারও তার কাছে টাকা নেন। কয়েকদিন আগে তার বোনের জন্ম সনদটি হাতে পান। তিনিসহ অনেকে নানা ভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সচিবের কাছে।
আলমগীর হোসেন নামে আরেক ভুক্তভোগী বলেন, জন্ম সনদপত্র করতে গেলে সচিব ১০০ টাকা চাই এবং আগে লেমেংটিং করে একশত টাকা নিত। কিন্তু এখন তা আর দিচ্ছে না।
আরেক ভুক্তভোগী বাইরুল ইসলাম বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদে জরুরী ভিত্তিতে জন্মসনদ নিতে যান। তার কার্যালয়ে দেখেন সচিব অনুপস্থিত । কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন কয়েকদিন ধরে সচিব আসছেন না । তার ভোগান্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের কাছে তিনি মুঠোফোনে উপাস্থাপণ করেন।
রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ আল শফি আনসারী বলেন, ইউপি সচিব সজিব কুমার সাহা জন্ম সনদপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নাগরিকদের হয়রানি করছেন। তার কাছে অনেক ভূক্তভোগী অভিযোগ করেছেন। সচিবকে তা নিষেধ করা সত্ত্বেও তিনি তার বারণ শুনছে না। এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এছাড়া গত ৬ জুলাই রহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আল শফি আনসারী উপপরিচালক স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাবগঞ্জ বরাবর সচিব সজিব কুমার সাহা ও হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মোসাঃ মারুফা খাতুন গত ১ সপ্তাহ যাবত ইউনিয়ন পরিষদে অনুপস্থিত বলে পত্র দেন।
এদিকে ইউপি সচিব সজিব কুমার সাহা তার অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার চাঁপাইনবাগঞ্জের উপ-পরিচালক এ, কে, এম তাজকির উজ-জামান সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,ওই ইউনিয়নের জনসাধারণ তার কাছে কোন অভিযোগ দেন নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।