রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে গত ২৪ ঘন্টায় আরও ১৪ ব্যাক্তির প্রাণহাণী ঘটেছে। শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এদের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৬ জনের করোনা পজেটিভ ছিল এবং অন্য ৮ জন রোগটির উপসর্গ নিয়ে মারা যান। এ নিয়ে চলতি মাসেই হাসপাতালটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭১ জন। আর চলতি মাসে করোনা ইউনিটে মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীরই ৮৮ জন। এছাড়াও একই সময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার হয়েছে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এ তথ্য নিশ্চিত করে শনিবার (১০ জুলাই) দুপুরে রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর ৭ জন, নাটোরের ৪, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও জয়পুরহাটের ১ জন করে ৩ জন। মৃতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। এদের মধ্যে ৫ জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৭ জন, এবং ৩১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ছিল ২ জন।
হাসপাতাল পরিচালক বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০ জন। আর একই সময় সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১১ জন। আর একই সময়ে হাসপাতালটিতে করোনায় থাকা ৪৫৪ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছেন ৫২২ জন। বাকিদের করোনা ওয়ার্ডের বারান্দা ও মেঝেতে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও ২০ শয্যা বিশিষ্ট আইউসিইউতে করোনায় চিকিৎসাধীন ১৯ জন।
হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, টানা পাঁচদিন কমার পর রাজশাহীতে আবারও বেড়েছে করোনাভাইরাস শনাক্তের হার। শুক্রবার (৯ জুলাই) রাজশাহীর দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৩৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৩০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ বেড়ে করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগের দিন বৃহস্পতিবার ছিল ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।
এদিকে করোনা সংক্রমনের ঊর্ধ্বগতি রোধে সারা দেশের ন্যয় গত ১ জুলাই থেকে রাজশাহীতেও চলছে কঠোর লকডাউন। তবে কঠোর লকডাউনের ১০ম দিন দুপুর পর্যন্ত মহানগরী জুড়ে ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা গেছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়াও বিভিন্ন অজুহাতে তারা রাস্তায় বের হচ্ছে। এছাড়াও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেশী দেখা যাচ্ছে। তবে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের কাছে কৈফিয়ত দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্টেট আবু আসলাম জানান, কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি রাজশাহীতে ১১ প্লাটুন সেনা, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা মাঠে কাজ করছে। এছাড়াও মাঠে রয়েছে ২২টি ভ্রাম্যমাণ আদালত। আইন অমান্য করে রাস্তায় থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদকালে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে বা জরুরী প্রয়োজন ছাড়ই বের হয়েছে এমনটি বোঝা গেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।