চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বালিহুদা গ্রামে বিরোধপুর্ণ সাড়ে ছয় বিঘা জমির ফলন্ত কলা,মরিচ,ধান,লাউ ও ধনেপাতা ফসল কাটিয়া ও জমি চষে দিয়ে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করেছে। প্রতিপক্ষরা শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী কৃষকেরা এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় জীবননগর থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা যায়,জীবননগর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা স্কুলপাড়ার জিন্নাত আলী মন্ডলের ছেলে নলে মন্ডল ও তার অন্যান্য ভাইদের সাথে সাড়ে ছয় বিঘা জমি নিয়ে একই গ্রামের ইদু মন্ডলের দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলে আসছে। এ অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে ইদু মন্ডলের ছেলে মিলন,কুদ্দুস,লিয়াকত,মিলনের ছেলে মিজান,লাল্টু মিয়ার ছেলে আলী হোসেন,শুকুর আলীর ছেলে আবদুল খালেক,খোরশেদ মন্ডলের ছেলে শাহ আলম ও শাহ আলমের ছেলে সাকিলসহ অজ্ঞাত ৫-৬ জন দেড় বিঘা জমির ৫০০ টি ফলন্ত কলা গাছ,এক বিঘা জমির ফলন্ত লাউ গাছ,তিন বিঘা জমির মরিচ ,দশ কাঠা জমির ধনেপাতা ও ১৫ কাঠা জমির ধান কেটে সাবাড় করে দেয়। পরবর্তীতে তারা ওই রাতেই ট্রাক্টর দিয়ে বিরোধপুর্ণ সমস্ত জমি চষে চাষযোগ্য করে তোলে। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা মাঠে গিয়ে প্রতিপক্ষদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে আবদুর রশিদ বলেন,প্রতিপক্ষ ইদু মন্ডলের সাথে আমাদের মামলা চলছে আদালতে। জমি আমাদের দখলে রয়েছে কয়েক যুগ ধরে। আমরা সব সময় বলেছি আদালতে যে রায় হবে তা আমরা মেনে নেব। কিন্তু ইদু মন্ডলের ছেলেরা শনিবার রাতের আঁধারে মাঠে গিয়ে আমাদের সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে থাকা ফলন্ত কলা গাছসহ সমস্ত ফসল কেটে ও জমি ট্রাক্টর দিয়ে চষে দিয়ে প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে। আমরা ঘটনা টের পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গেলে প্রতিপক্ষ হাতে হাসুয়া,দা,লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ধাওয়া করে। আমরা জীবনের ভয়ে পালিয়ে বাড়ী ফিরে যায়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত লিয়াকত আলী বলেন,বিরোধপুর্ণ জমির রায় আদালত বার বার আমাদের পক্ষে দিলেও প্রতিপক্ষ আবদুর রশিদরা তা অমান্য করে আসছে। সর্বশেষ হাইকোর্টে আপিল করেছেন বলে দাবী করলেও সে সংক্রান্তে গত এক বছর ধরে কোন কাগজপত্র না দেখিয়ে গায়ের জোরে জমি দখল করে ভোগ করছেন।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য আবদুল হান্নান বলেন,ঘটনার কথা শুনে আমি সকালে ঘটনাস্থলে জমিতে গিয়েছিলাম। ফসল তছরুপ ও জমি চষা দেখেছি। তবে কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তা আমার জানা নেই।
জীবননগর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। রায়পুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মহাসিন আলীকে তদন্ত ভার দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।