নওগাঁর সদর, মহাদেবপুর, পত্নীতলা ও নিয়ামতপুর উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১১৫ জন।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) দুপুরে নওগাঁ জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পার্সন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা: মঞ্জুর-এ মোর্শেদ জানান, সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে জেলার সদর উপজেলার সচিব মন্ডল (৮৫) ও মেরিনা চৌধুরী খাতুন (৬৫), মহাদেবপুর উপজেলার খাদেমুদ্দিন (৭০), পত্নীতলা উপজেলায় আকতারুল ইসলাম (৩০) ও নিয়ামতপুর উপজেলার সিরাজুল ইসলাম (৭০) সহ মোট পাঁচজন মারা গেছেন। এনিয়ে এই উপজেলায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৭।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ২২৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩০ জন এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ২৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৫ জনসহ নতুন করে মোট ১১৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন, নওগাঁ সদর উপজেলায় ৭১ জন, আত্রাই উপজেলায় ১১ জন, রানীনগর উপজেলায় আটজন, মান্দা, পত্নীতলা, সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় পাঁচজন করে, পোরশা উপজেলা চারজন, মহাদেবপুর ও বদলগাছী উপজেলায় তিনজন করে।
গত বছরের ২৩ এপ্রিল নওগাঁয় প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৩১৪ জন। সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৩৬১ জন।
নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের করোনা সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষন করে দেখা যায়, জেলায় এখন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ২ দশমিক ১। ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, ‘চলতি বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি শুরু হওয়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা উভয়ই বেড়েছে। এই সময়ে গত বছরের তুলনায় করোনায় শনাক্ত ও মৃত্যুর হার দ্বিগুণের বেশি।
করোনার প্রথম ঢেউয়ে এক বছরে যত করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয়, তার চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে চলতি বছরের গত দুই মাসে।’
মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, ‘উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও নমুনা পরীক্ষা না করা এবং যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু না করায় সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়ছে।’
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের ইনচার্জ শাপলা খাতুন বলেন, ‘অনেক রোগী আছেন যাঁরা জ্বর, সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে বাড়িতে থাকছেন। কিন্তু সঠিক সময়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন না। তাঁরা যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ছেন, তখন হাসপাতালে আসছেন। তখন আর কিছুই করার থাকছে না।’