আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে কঠোর লকডাউন শিথিল করায় আগের চেহারায় ফিরেছে সাতক্ষীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) থেকে সারাদেশে যানবাহন ও দোকানপাট-শপিংমল খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত কোনো ধরনের বিধিনিষেধ ছাড়াই যানবাহন ও দোকানপাট চলবে। সরকারের এমন ঘোষণায় সাতক্ষীরা শহরে সকাল থেকে জনতার ঢল নামে। মানুষের মধ্যে দেখা দেয় কর্ম চঞ্চলতা। গণপরিবহন চলাচল করায় শ্রমিকদের মধ্যে বিরাজ করে ঈদানন্দ। সাধারণ ব্যবসায়ীরাও দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে স্বাচ্ছন্দে। মুহূর্তে বদলে যায় চিরচেনা শহরের রূপ। জনতার কোলাহলে যেন হঠাৎ জেগে ওঠে শহর।
করোনা সংক্রমণ কমাতে কয়েকধাপে কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয় যা বুধবার পর্যন্ত বলবত ছিল। কিন্তু ঈদের কারণে কঠোর লকডাউনের মেয়াদ না বাড়িয়ে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত শিথিল করা হয়।
দির্ঘদিন বাসের স্টিয়ারিং ধরতে পেরে মহাখুশি ড্রাইভার সিরাজুল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, গোলাম সরোয়ার, আনোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমানসহ অনেকেই। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তারা বাস চালাতে চান। দির্ঘদিন লকডাউনের কারণে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করে আসছিলেন বলে জানান।
একই কথা বলেন ব্যবসায়ীরাও। তারা বলেন, লকডাউন চলাকালী ক্ষুদ্র পরিসরে যা কেনা-বেচা হতো তা দি সংসার নির্বাহ করাই কঠিন ছিল। পুঁজি বসে গেছে সংসারের পেছনে। এখন অনেক ব্যবসায়ী পুঁজি সংকটে রয়েছেন। তারা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে, ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ফের সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। এতে আগের মতোই গণপরিবহন ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
পরিবহন ও শপিংমল ব্যবসায়ীরা বলছেন, পরিবহন ও শপিংমল-দোকানপাটে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক কাজে নিয়োজিত। ঈদের আগ মুহূর্তে কয়েকদিন যানবাহন ও দোকানপাট খোলার অনুমতি দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরছে পরিবহন শ্রমিকদের। শপিংমল ও পরিবহনখাতে ব্যবসার প্রধান সময় ঈদের আগে ও পরে। এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন শিথিল হওয়ায় কর্মহীনরা কিছু উপার্জন করতে পারবেন।
পরিবহন চলাচলের অনুমতি দিলেও করোনা সংক্রমণ কমাতে বেশ কয়েকটি শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একইসঙ্গে ঈদ পরবর্তী ১৪ দিন গণপরিবহণসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধেরও নির্দেশনা দিয়েছে সংস্থাটি।
বিধিনিষেধ শিথিলের পর গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করার শর্ত দিয়েছে সরকার। এ ক্ষেত্রে যাত্রীকে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া গুণতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে যাত্রীসহ পরিবহন শ্রমিকদের।
এছাড়া রাখতে হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। লঞ্চের ক্ষেত্রে ডেকের যাত্রীদের মার্কিং অনুযায়ী বসতে হবে। এই আটদিন স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিকভাবেই চলবে সরকারি-বেসরকারি অফিস।
বিধিনিষেধ শিথিল করা হলেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অপর নির্দেশনায় বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিস্তার রোধে এ সময়ে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
এ সময়ে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে গমন ও জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন- বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পরিহার করতে হবে।