ভাড়ি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার নদ-নদীগুলোতে বেড়ে যায় পানি। তলিয়ে গেছে বেশ কিছু নি¤œাঞ্চল। এতে করে পানিতে তলিয়ে ব্যাপাক ক্ষতি হয়েছে কাউন আর আউশ ধানের। নদী অববাহিকা এবং চরাঞ্চলের এসব ফসল কাটার আগেই বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। কৃষকরা তলিয়ে যাওয়া কাউন কেটে কিছুটা সংগ্রহ করতে পারলেও সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে আউশ ধান। চরাঞ্চলের বাসিন্দার জানান, এখন পর্যন্ত বড় ধরনের বন্যা হয়নি। যেটুকু পানি হয়েছে তাতে চরাঞ্চলের বাড়িঘর না ডুবলেও আবাদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কাউন, আউশ ধান, পাটসহ সবজির আবাদ। কাউন এবং আউস ধান কাটার সময় এখন। চরাঞ্চলের কিছু কিছু জমির কাউন এবং ধান কাটা হলেও অনেক জমির ফসল পানির নিচে পড়ে যাওয়ায় ক্ষতি পুষতে হয়েছে।
উপজেলার কচাকাটা ইউনিয়নের গঙ্গাধর নদীর পাড়ে টংকার চর এলাকার কৃষাণি ফিরোজা বেগম জানায়, তার দুই বিঘা কাউন আর তিন বিঘা আউশ ধান পানির নিচে চলে যায়। কাউন পানির নিচ হতে কিছুটা কাটলেও বাকি গুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি আরও জানান, দুই বিঘা জমির কাউন ঘরে তুলতে পাড়লে সংসারের তিন-চার মাসের খরচ হয়ে যেত। প্রতি বিঘায় ৪ থেকে ৫মণ কাউন পাওয়া যেত। বর্তমানে মণ প্রতি ১২শ থেকে ১৩শ টাকা কাউণ বিক্রি হচ্ছে।
একই এলাকার কৃষক উমর আলী জানান, এবার ৩ বিঘা জমিতে কাউন আর ৫ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে ৭০ ভাগ কাটতে পারলেও বাকিগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। কাউন এবং ধান মিলে তার ৫০ থেকে ৬০হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। শৌলমারী এলাকার আবদুল মালেক জানান, পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তার দেড় বিঘা জমির কাউন কাটতে পারেন নাই। এছাড়াও নারায়নপুর ইউনিয়নের ঢাকডহর, চর সারীসুরি, চৌদ্দকুড়ি, বেরুবাড়ি ইউনিয়নের চর বেরুবাড়ি, বল্লভের খাষ ইউনিয়নের ফান্দের চর এলাকার নিচু এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে কাউন এবং আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে।
নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, এবার নাগেশ্বরী উপজেলায় ১৮ হেক্টর জমিতে কাউন এবং ৭শ ৪০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান আবাদ হয়েছে। বেশির ভাগ আউশ এবং কাউন কর্তণ হয়ে গেছে। এর মাঝে একেবারে চরাঞ্চলের সামান্য জমির আবাদ পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এতে লক্ষ্য মাত্রায় প্রভাব ফেলবে না।