চিকিৎসক, নার্স, লোকবলের সংকটে ধুকছে শেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় চিকিৎসা কেন্দ্র ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। উপজেলা হাসপাতালগুলোরও একই অবস্থা। যে কারণে আন্তরিকতা থাকা স্বত্ত্বেও যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে এই সংকট নিরসন করে কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সংগঠনের নেতারা।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুরের ১০০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালকে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে উন্নীত করা হয়। তবে আর্থিক অনুমোদন না মেলায় ১০০ শয্যার বরাদ্দ দিয়েই চালাতে হচ্ছে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম। হাসপাতালে বর্তমানে কর্মরত চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১৯ জন। অথচ ১০০ শয্যার জন্যই চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ সংখ্যা ৩৬ জন। জরুরি বিভাগের ৩ চিকিৎসকের সবগুলো পদ খালি। ৪ মেডিকেল অফিসারের ২ টিসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে। নার্সের ৮৯টি পদের মধ্যে শূন্য পদের সংখ্যা ১৭টি। এ ছাড়া আয়া, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকট রয়েছে। এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ চিকিৎসক, ৮ নার্সসহ ১৭ জন স্টাফ আইসোলেশনে রয়েছেন।
উপজেলা হাসপাতাল থেকে ৪ চিকিৎসককে ডেপুটেশনে এনে জোড়াতালি দিয়ে চালাতে হচ্ছে এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। অথচ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসাপাতালের অনুমোদিত চিকিৎসকের পদ সংখ্যা ৫৫ জন। তাছাড়া অন্য ৪ উপজেলার কোন হাসপাতালেই ৫-৬ জনের বেশি চিকিৎসক নেই। যেখানে অনুমোদিত চিকিৎসকের পদ সংখ্যা ১৪ জন করে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৭শ থেকে ৮শ রোগী চিকিৎসা সেবা নেয় এবং ইনডোরে ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ রোগী ভর্তি থাকে। বতর্মানে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিটে শতাধিক রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
১০০ শয্যার বরাদ্দ দিয়ে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল চালাতে গিয়ে ভর্তি রোগীদের ওষুধ ও খাবারের যোগান দিতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে। চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তাতে দুর্ভোগে পড়ছেন রোগীরা। এদিকে অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।
চিকিৎসক, নার্স ও লোকবল সংকটের কারণে হাসপাতালে রোগীদের কাঙ্খিত সেবা দিতে না পারার কথা কথা স্বীকার করেন সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম আনওয়ারুর রউফ। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বার বার অবহিত করা হলেও শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে না। চিকিৎসক ও লোকবল পেলে হাসপাতালের সেবার মান আরও বাড়ানো এবং কাঙ্খিত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।