কুরবানীর ঈদে হাজার হাজার গরু, খাসি, ভেড়া, মহিষ, উট, দুম্বা ইত্যাদি পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। এসব পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার চূড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত নানা ধরনের হাতিয়ার সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় বাজারগুলোতে। উল্লেখযোগ্য হাতিয়ার হিসাবে দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি হাতের নাগালেই মিলছে স্থানীয় কামারের দোকান গুলোতে।
ছুরি, চাকু, দা, চাপাতি এসব তো নিত্যদিন ব্যবহার করা হয়েই থাকে, কিন্তু কোরবানির ঈদে এসবের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কোরবানির ঈদের পশু জবাই কে কেন্দ্র করে লালমনিরহাট জেলার প্রত্যন্ত জনপদ গুলোতে কামার ও পশু জবাইয়ের হাতিয়ার সরঞ্জাম এর দোকানদাররা (কামার) অনেকটাই ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জ¦লন্ত আগুনে গরম লোহার পিটাপিটির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে কামারপাড়ার দোকানগুলো। আবার এসব ধাতব সরঞ্জামাদি শান দিতে কামারের দোকানগুলোতে ক্রমেই ভিড় চোখে পড়ছে। জেলার অন্যতম বৃহৎ হাট বাজারের কামারপাড়াগুলোর ব্যস্ততা এখন সবচেয়ে বেশি।
লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ,বড়বাড়ি, কুলাঘাট, নয়াহাটসহ বিভিন্ব বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায় পশু জবাইয়ের হাতিয়ার গুলো কিনতে ক্রেতাদের ব্যাপক ভির।
বড় ধরনের ছুরি গুলোর দাম ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত এবং ছোট ছুরি দাম ১০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। মিডিয়াম ছুরিগুলো পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। দেশি চাপাতিগুলো কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৩৫০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিদেশি চাপাতির দাম পড়বে ৪০০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিটি বঁটির দাম পড়বে ২০০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত। হাড় কাটার ছোট চাইনিজ কুড়াল পাওয়া যাবে ৩৫০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। গাছের গুঁড়ির কাঠ পাওয়া যাবে ৩০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। মাংস রাখার পলি ও প্লাস্টিকের ম্যাটের দাম ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের চপিং বোর্ড কেনা যাবে ৪০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। হ্যান্ড মিট কাটার পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। জীবাণু ও দুর্গন্ধনাশক তরল ও ফ্লোরেক্স বোতল প্রতি দাম পড়ে ১৭০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।
হাতিয়ার ক্রয় করতে আসা জেলা শহরের সাহেবপাড়া এলাকার নবিয়ার রহমান বলেন, ঈদের আগেই নতুন ছুরি কেনার কাজটি আগেভাগেই সেরে রাখা ভালো। আর সময় থাকতে এসব কাজ শেষ না করলে শেষ মুহূর্তে তাড়াহুড়োয় চড়া দাম গুনতে হবে।
অপর ক্রেতা হাসিম রেজা বলেন, কোরবানীর ঈদ এলেই পশু কোরবানি দেয়ার এবং মাংস কাটার জন্য দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি হাতিয়ারের প্রয়োজন হয়। তাই এসব হাতিয়ার ঈদের আগেই ক্রয় করে রাখতে হয়। যদিও আগে কিছু কেনা ছিল, সচরাচর এগুলো জিনিসের সব সময় প্রয়োজন না হওয়ায় অনেক হাতিয়ার হারিয়ে গেছে তাই নতুন করে আবারও কিনতে হচ্ছে।
কোরবানীর হাতিয়ার তৈরীর কারিগর (কামার) জসিম উদ্দিন বলেন, কোরবানীর ঈদ এলেই আমাদের দা-বঁটি, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি হাতিয়ার গুলোর চাহিদা বেড়ে যায়, তাই আমরা আগে থেকেই এসব হাতিয়ার তৈরী করে রাখার চেষ্টা করি। অন্যান্য সময়ের থেকে কোরবানি ঈদে আমাদের হাতিয়ার ব্যবসাটা একটু ভাল হয়। তাই আমরা এই কোরবানি ঈদের দিকে তাকিয়ে থাকি।