ভৈরবে মেঘনা নদীতে নৌ-যানে চাদাঁবাজি ও হয়রানীতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মাঝি-মাল্লারা। এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে নদীতে চলাচলকারী নৌ-যানে চাদাঁদাবী ও হয়রানী করছে। চাদাঁ দিতে না চাইলে নৌ-যান আটকে রেখে নানাভাবে মাঝি-মাল্লাদের হয়রানী করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রাচীনকাল থেকে বন্দরনগরী ভৈরবের সাথে নদী পথে হাওর বেষ্টিত কিশোরগঞ্জ ,সিলেট,সুনামগঞ্জ,নেত্রকোণা ও নরসিংদীর মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করে আসছে।নদী পথে কম খরচে মালামাল ও যাত্রী পরিবহন সহজ হওয়ায় নদী পথ ছিল যোগাযোগের একমাত্র বাহন। এরই ধারাবাহিকতায় এখনো নদী পথে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নদীতে ইঞ্জিন চালিত নৌকা,ভলগেট,ষ্টীলের নৌকা,লঞ্চ যোগে নদী পথে ভৈরব থেকে সুনামগঞ্জে ও নরসিংদীতে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন এখনো বিদ্যমান। তবে কি পরিমান জলযান নদী পথে চলাচল করে তার কোন সঠিক হিসেব নেই ভৈরব-আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ নৌ-অধিদপ্তরের কাছে। তাছাড়া বৈধ জলযান বা সার্ভেয়ার করা নৌ-যানের সঠিক পরিসংখ্যান ও নেই। তবে নৌ-অধিদপ্তরের আনুমানিক হিসেব মতে প্রায় লক্ষাধিক নৌ-যান সিলেট,সুনামগঞ্জ,নেত্রকোণা,কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদীর ৬টি জেলায় মেঘনা,ঘোড়াউত্রা,কালি,সুরমা,কুশিয়ারা ও যাদু কাটা নদী পথে চলাচল করে থাকে। আর এসব নৌ-যানের ফিটনেস ও বৈধ কাগজ পত্র বা সার্ভেয়ার নেই এমন অজুহাতে নৌ-যান আটকে রেখে মাঝি-মাল্লাদের কাছে মোটা অংকের চাদাঁ দাবি করে অভ্যন্তরীন আঞ্চলিক নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা। শুধু তাই নয় নদীর তীরে গড়ে উঠা ডক ইয়ার্ড, অবৈধ স্থাপনা থেকে অনৈতিক ভাবে মাসোহারা নিচ্ছে বলে ও অভিযোগ রয়েছে। ভোক্তভোগীরা জানান,প্রতিদিন তাদের আটক করে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। টাকা দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেয় ,না দিলে নানাভাবে হয়রানী করে।একদিকে করোনার কারনে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।আবার অন্যদিকে অভ্যন্তরীন নৌ- অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীদের অত্যাচার এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। এ থেকে তারা পরিত্রাণ চায়।
এ বিষয়ে নৌকার মাঝি নুরুল ইসলাম অভিযোগে জানান,অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের ভৈরব কার্যালয়ের নৌ-পরিবহন পরিদর্শক জসিম উদ্দীন প্রায়ই মেঘনা নদীতে তাদের নৌকা আটক করে বিভিন্ন অজুহাতে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। দাবিকৃত টাকা না দিলে তাদের নৌকা আটক করে নানাভাবে হয়রানী করে।
এ বিষয়ে মোঃ বদরুল,কালা মিয়া,জাকির হোসেনসহ এশাধিক মাঝি অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধওেভৈরব কার্যালয়ের নৌ-পরিবহন পরিদর্শক জসিম উদ্দিন তার লোকজন নিয়ে মাঝিদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে ১০/২০ হাজার টাকা করে চাদাঁ দাবি করে। তার চাদাঁ দাবির কাছে তারা অসহায়। তাই তারা চাদাঁ ও হয়রানী বন্ধে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নৌ-পরিবহন পরিদর্শক জসিম উদ্দিন জানান,নদীতে চলাচলকারী অবৈধ নৌ-যানকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এছাড়া আমি অপরাধী হলে আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন ( বিআইডব্লিউটি ) এর চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সম্প্রতি ভৈরব আসলে তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংবাদিকদের বলেন ,তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি।