সিন্ডিকেট করে বিনা পয়সায় সংগ্রহ করেছিল কোরবানির ছাগলের অসংখ্য চামড়া। কিন্তু লবন ব্যবসায়ীরাও সিন্ডিকেট করে বাড়িয়ে দেয় দাম। বেশি দামে লবন কিনে চামড়ায় দেয়া হয়নি। তাই স্বাভাবিকভাবেই পচন ধরে বিপুল সংখ্যক চামড়ায়। অগত্যা চামড়াগুলো ফেলে দেয়া হয় নদীর পানিতে।
নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরের আত্রাই নদীতে অসংখ্য চামড়া ভাঁসতে দেখে ঈদের পরদিন বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) বিকেলে স্থানীয় পরিবেশবিদরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালে থানা পুলিশ বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। জরুরীভিত্তিতে তদন্ত করে আটক করা হয় চারজনকে। এরা হলো, চামড়া ব্যবসায়ী উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের কুঞ্জবন গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে সাদেক আলী (৪৫), কসাই সদর ইউনিয়নের চকগোবিন্দ গ্রামের ছফের আলীর দুই ছেলে কোরবান আলী (৪৭) ও সুজন আলী (৫০) এবং মহাদেবপুর বাগানবাড়ি এলাকার মাহমুদ আলীর ছেলে আরমান আলী (৪০)।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে থানার এসআই শামিনুর রহমান বাদি হয়ে ফৌজদারি দন্ডবিধি আইনের ১৫১ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। শুক্রবার (২৩ জুলাই) বিকেলে তাদেরকে নওগাঁ কোর্টে চালান দেয়া হয়।
এসআই শামীনুর রহমান জানান, আটকরা স্থানীয়ভাবে কোরবানির চামড়া কিনে নওগাঁ আড়তে বিক্রি করতেন। তাদের মধ্যে একজন স্বীকার করেছেন যে, চামড়ায় পচন ধরায় তারা সেগুলো ফেলে দিয়েছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সাদেক আলী জানান, গত কয়েকবছর ধরে ঢাকার ট্যানারি মালিকেরা চামড়া নিয়েও প্রায় কোটি টাকা দাম পরিশোধ করেননি। ফলে এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরা নি:স্ব হয়েছেন। এই অবস্থায় তারা সামান্য দাম দিয়ে গরুর চামড়া কিনেছেন। কিন্তু ছাগলের চামড়া কোরবানিদাতারা তাদেরকে বিনা টাকায় দিয়ে গেছেন। লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা সেসব চামড়ায় প্রয়োজনমত লবন দিতে পারেননি। তবে তাদের কেউ কোন চামড়া নদীতে ফেলেননি বলেও দাবি করেন।
স্থানীয় পরিবেশবিদ কুঞ্জবন বিচিত্র পাখি উৎপাদন বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মুনসুর সরকার জানান, পচন ধরা চামড়াগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলা হলে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যেত।