নওগাঁর মহাদেবপুরে করোনার প্রকোপ কমেছে। রোববার (২৫ জুলাই) এখানে নতুন করে কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। কেউ মারা যাননি। নতুন কাউকে সুস্থও ঘোষণা করা হয়নি। মাত্র তিন সপ্তাহের ব্যবধানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন এই উপজেলায় কয়েকদফা লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় এই সুফল পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত কন্ট্রোল রুম সূত্র জানায়, রোববার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে সাতজনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে সকলেরই করোনাভাইরাস নিগেটিভ পাওয়া যায়। এদিন পিসিআর ল্যাব থেকে কোন রিপোর্ট আসেনি। এই উপজেলায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯০ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪৪৬ জন। আর মারা গেছেন ১৬ জন। এখন করোনায় আক্রান্ত রয়েছেন মাত্র ২৮ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষন করে দেখা যায়, তিন সপ্তাহ আগে গত ৪ জুলাই কঠোর লকডাউন চলার সময় এখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন ১২৬ জন। এর এক সপ্তাহ পর ১১ জুলাই এই সংখ্যা নেমে আসে অর্ধেকেরও কমে ৬১ জন। পরের সপ্তাহে ১৮ জুলাই এই সংখ্যা আরও কমে দাঁড়ায় ৪৪ এ। আর চলতি সপ্তাহে এটা কমে হয় ২৮।
এই উপজেলায় গতবছর ১৭ মার্চ শুরু হওয়া থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ জন। এর মধ্যে গত মে মাস পর্যন্ত এক বছর দুই মাসে মারা গেছেন চারজন। গত জুনে মাত্র এক মাসেই মারা গেছেন সাতজন। আর চলতি মাসে ১৭ তারিখ পর্যন্ত মারা গেছেন পাঁচজন। গত এক সপ্তাহে এখানে কেউ মারা যাননি।
উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিলন জানান, লকডাউনের শুরু থেকে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা, কর্মচারী, থানা পুলিশ, বিজিপি, সেনাবাহিনী, আনসার বাহিনী ও অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবীর দিনরাত পরিশ্রমের ফলে এখানে করোনাভাইরাসের প্রকোপ কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এজন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
তিনি জানান, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯০টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটিতে নির্বাচিত ওয়ার্ড মেম্বারকে প্রধান করে শিক্ষক, সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ১০ সদস্য বিশিষ্ট করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই হিসেবে এখন ৯০০ স্বেচ্ছাসেবী প্রতিদিন করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কাজ করছেন, মাস্ক বিতরণ করছেন। করোনার প্রকোপ কমার জন্য তিনি এই বিশাল জনদরদীদেরও ধন্যবাদ জানান।