করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘কঠোরতম লকডাউনের’ কারণে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এবং ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান ‘কঠোরতম লকডাউনের’ কারণে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এবং ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গত ১৩ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা বিধিনিষেধ সংক্রান্ত পরিপত্রের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি ও ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহভিত্তিক চলমান অ্যাসাইনমেন্ট বিতরণ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। এ কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও ৪র্থ দিনে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ডেকে এ্যাসাইনমেন্ট এবং তার জন্য টাকা নিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার বড়গ্রাম ইউনিয়নের রঘনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, মুক্তাগাছা উপজেলার রঘুনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১০শ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্টের প্রশ্নপত্র সংগ্রহের জন্য গত সোমবার (২৬ জুলাই) বিদ্যালয়ে আসেত বলা হয়। পরে সোমবার সকালে ঐ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়ে তাদের বিষয় ভিত্তিক এসাইনমেন্ট সংগ্রহ করে। বিষয়টি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মনসুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদত হোসেনকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বলেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এসাইনমেন্ট সংগ্রহ করার জন্য বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ফোন করে সোমবার (২৬ জুলাই) আসতে বলে। সোমবার যথা সময়ে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হয়ে এসাইনমেন্টের জন্য একটি প্রশ্নপত্র, চারটি এ ফোর কাগজ ও একটি কভার পেজ নিয়ে বিশ টাকা করে সর্বমোট এসাইনমেন্ট বাবদ একশত বিশ টাকা দিতে হবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে রঘুনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সজিব হাসান বলেন, আমার মেয়েও ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। মেয়েকে নিয়ে আমি নিজেই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম এবং শিক্ষার্থীরাও এসেছিল। এসাইনমেন্ট বাবদ কারও কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি তা অস্বীকার করেন। রঘুনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বড়গ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুজ্জজামান সিদ্দিক জানান, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ডেকে এসাইনমেন্ট নেওয়ার বিষয়টি সোমবার রাতে প্রধান শিক্ষক আমাকে জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজহারুল ইসলাম জানান, এসাইনমেন্ট নেওয়ার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছিল, পরে তাদেরকে এসাইনমেন্ট দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে আসার ঘটনাটি সত্য। এরকম কখনও না করে তাদেরকে সর্তক দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মনসুর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাকে শোকজ করার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস উর্ধ্বমুখী সংক্রমনরোধে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর গত ০১ জুলাই মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের এসাইনমেন্ট কার্যক্রম স্থগিত করেন।