পাওনা ৮০ হাজার টাকা চাইতে গিয়ে দেনাদারদের হামলায় কান হারালেন ব্যবসায়ি কবির মিয়া (৩৩)। কবিরের বাড়ি অরূয়াইলে। আর হামলাকারী খাইরূল (৩৭) ও দ্বীন ইসলাম (৪২) গংরা কবিরের প্রতিবেশী। গত শনিবার রাতে খাইরূলদের বাড়িতেই এ ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে সেখানকার একটি প্রভাবশালী মহলের বিরূদ্ধে। ফলে মামলা করতে প্রথমে ভয় পেলেও গত সোমবার রাতে কবিরের চাচা আবু তাহের বাদী হয়ে সরাইল থানায় একটি মামলা করেছেন।
আহত কবির ও তার পরিবার জানায়, শহিদ মিয়ার ছেলে কবির। তাদের মূল বাড়ি বারপাইকা গ্রামে। ৪০-৪২ বছর আগে তারা অরূয়াইলে বাড়ি করেছেন। জয়নাল মিয়ার ছেলে খাইরূল ও দ্বীন ইসলামের মূল বাড়ি ধামাউড়া গ্রামে। এখন তারা কবিরদের প্রতিবেশী। অরূয়াইল বাজারে কবির ক্রোকারিজের মালিক কবির মিয়া। খাইরূল ঘুরে ফিরে তৈরী কাপড় বিক্রয়ের ব্যবসা করে। মাঝে মধ্যে কবিরের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। আবার ফেরৎ ও দেন। গত এক মাস আগে কবিরের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা কর্জ নিয়েছে খাইরূল। চাইলেই বলে দিয়ে দিব। এভাবেই ঘুরাচ্ছেন কবিরকে। গত রোববার দিনের বেলা কবিরকে বলেছে রাতে বাড়িতে গিয়ে টাকা আনতে। কবির রাতে দোকান বন্ধ করে খাইরূলদের বাড়িতে যায়। টাকা না দিয়ে উল্টো সময় চেয়ে কবিরকে ধমকাতে থাকে খাইরূল। একপর্যায়ে বলে মেহমানের সামনে টাকা চেয়েছস। তোর কান কেটে দিব। যেই কথা সেই কাজ। দা নিয়ে দুই ভাই সহ ৩-৪ জন কবিরের উপর হামলা চালায়। প্রথমে কোপ দিয়ে দুই পা আহত করে। পরে পেট। সবশেষে একটি ছুঁড়া দিয়ে কবিরের বাম কানের লথি ও গাল কেটে ফেলে। আহত কবিরকে রাতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা খারাপ দেখে রেফার করা হয় ঢাকা মেডিকেলে। ঢাকা মেডিকেল থেকে কবিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় ইন্সটিটিউট অফ বার্ণ এ- প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছে। তবে ঘটনার পর হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে মামলা না করতে কবিরদের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ ওঠেছিল। কিন্তু গত সোমবার এ ঘটনায় একটি মামলা করেছেন আহত কবিরের চাচা তাহের মিয়া। আহত কবির বলেন, আমরা যেখানে বাড়ি করে আছি সেখানে বারপাইকার শুধু আমরাই। চারিদিকের সবাই ধামাউড়া গ্রামের। তারা তো শক্তিশালী। বিভিন্ন কারণে ধামাউড়ার লোকজনকে এমনিতেই অরূয়াইলের অন্যান্য গ্রামের লোকজন ভয় পায়। অরূয়াইলের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ জমা হয়েছে। তবে ভুল আছে। ভুল সংশোধনের পর মামলা নথিভূক্ত হবে। অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।