দিঘলিয়ার ব্যবসায়ী ইয়াসিন হত্যায় সানির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ইয়াসিনের মামা শাহজাহান গাজীর ওপর হামলা ও তাকে পঙ্গু করার প্রতিশোধ নিতে খুন করা হয় পথের বাজারের ব্যবসায়ী ও উত্তর চন্দনীমহল (বোগদিয়া) নিবাসী ইয়াসিন শেখকে।
দিঘলিয়া থানা পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতারকৃত সানি হত্যাকা-ের সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে গত ২৮ জুলাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
এদিকে গত বুধবার দুপুরে ইয়াসিনের পরিবারের পক্ষ থেকে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদিক সন্মেলন করা হয়েছে। সাংবাদিক সন্মেলনে ইয়াসিনের মা হাফিজা বেগম ও স্ত্রী খাদিজা বেগম দিঘলিয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁদের লিখিত অভিযোগ ও আনীত অভিযুক্তদের নাম পরিবর্তনের অভিযোগ উল্লেখ করে তাঁরা ইয়াসিনকে যারা হত্যা করেছে তাদের গ্রেফতার ও ফাঁসীর দাবী জানান।
হত্যাকান্ডের শিকার ইয়াসিন শেখের মা হাফিজা বেগমের অভিযোগের বিষয়ে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রিপন কুমার সরকার এ প্রতিবেদককে বলেন, “পুলিশ সুপার স্যার, সার্কেল কর্মকর্তা স্যারের উপস্থিতিতে ২৭ জুলাই নিহত ইয়াসিন শেখের মা হাফিজা বেগম আমাদের কাছে যে এজাহার দিয়েছেন সেটাই আমরা মামলা হিসাবে রেকর্ড করেছি। এ-সংক্রান্ত সকল প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। এখানে বিভ্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই”।
ইয়াসিনের মামা শাহজাহান গাজীর ওপর প্রতিশোধ নিতে খুন করা হয় দিঘলিয়ার ব্যবসায়ী ইয়াসিন শেখ কে। হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে বুধবার (২৮ জুলাই) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এ মামলার আসামি সানি। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মনিরুজ্জামানের আদালতে সে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। গ্রেপ্তারকৃত সানি গাজী পাড়ার বাবুল খাঁয়ের ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সঞ্জিব কুমার জানান, মঙ্গলবার সানিকে দিঘলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে আজ তাকে আদালতে উপস্থিত করা হয়। সানি হত্যাকান্ডের ব্যাপারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছে। তদন্তের স্বার্থে সব এই মুহূর্তে প্রকাশ করা ঠিক হবে না।
তবে তিনি আরও জানান, এ হত্যাকান্ডে জড়িত অনেকের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছে সানি। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালানো হবে। অতিসত্বর সকল আসামিকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তদন্ত কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
জানা গেছে, ইয়াসিনের মামার সাথে কিছুদিন পূর্বে খুনীদের বিরোধ হয়। আর এ বিরোধের জেরে খুন হয় ইয়াসিন। সে দিন ইশার নামাজের পর দুর্বৃত্তরা ভিকটিমকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে চন্দনীমহল গাজী পাড়া এলাকায় মুমূর্ষ আবস্থায় ফেলে যায়। পরে রাত ১০ টায় নিহতের আত্মীয় স্বজনরা খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে নিহতের মা দিঘলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
গত ২৫ জুলাই রাতে পূর্ব বিরোধের জের ধরে চন্দনীমহল গাজী পাড়ায় খুন হন দিঘলিয়ার পথেরবাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইয়াসিন শেখ (৪২)। হত্যাকান্ডের একদিন পর দিঘলিয়া থানায় একটি মামলা রেকরর্ড হয়। মামলা নং ৯ তাং ২৭/০৭/২০২১। ধারা ৩০২/৩৪।