ভোলার মুল ভুখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা। মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গন ও প্রবল জোয়ারের প্রভাবে বেড়ীবাধঁগুলো ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। উপজেলা সুরক্ষায় দ্রুত টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের দাবী দেড় লক্ষাধিক মানুষের। টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মিত না হলে বিধ্বস্ত বেড়ীবাঁধ দিয়ে বন্যা, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণীঝড় ও প্রবল জোয়ারের সময় বেড়ীবাধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি ঢুকে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্ধী হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নের পশ্চিম কুলাগাজির তালুক রামনেওয়াজ মৎস্য ঘাট সংলগ্ন বেড়ীবাঁধটি জোয়ারের তোড়ে প্রায় সম্পুর্ন ভেঙ্গে গেছে। যে কোন সময় সম্পুর্ন বেড়ীবাঁধটি ভেঙ্গে ভেতরে জোয়ারের পানি প্রবেশ করবে। পানিবন্ধী হয়ে পড়বে কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া একই গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্ধী রয়েছে। বৃষ্টির পানি জমে পুর্ব কলিাগাজীর তালুক ও পশ্চিম কুলাগাজির তালুক গ্রামের মানুষের ঘরবাড়ী ডুবে গেছে। মনপুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠও পানিতে ডুবে রয়েছে। পানি যাওয়ার কোন ব্যাবস্থা নেই। পানি না যাওয়ায় খুব কষ্ট করে বসবাস করছেন এলাকার মানুষ। পানিবন্ধী মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য বিকল্পভাবে বেড়ীবাধেঁর ভিতর থেকে পানি সরানোর উদ্যোগ গ্রহন করার জন্য এলাকার মানুষেরা দাবী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধগুলো পানিউন্নয়ন বোর্ড কিছুদিন আগে মেরামত করে দিয়েছেন। তবে যারা মেরামত করিয়েছেন তারা ভালোভাবে মেরামত না করায় ও জিও ব্যাগ না দেওয়ার কারনে জোয়ারের স্্েরাতে আবারো বেড়ীবাধঁ ভেঙ্গে যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
হাজির হাট ইউনিয়নে ঘুরে দেখা যায়, জোয়ারের পানির স্্েরাতে ও ঢেউয়ের আঘাতে হাজির হাট ইউনিয়নের নির্মিত বেড়ীবাধঁগুলো প্রায় বিধ্বস্ত। বেড়ীবাধেঁর বাহিরে যে জিও ব্যাগগুলো দেওয়া হয়েছে সেসব জিও ব্যাগের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে। অনেক স্থানে জিও ব্যাগ নেই। চৌধুরী বাজারের পুর্বপাশের বেড়ীবাধেঁর অবস্থা খুবই নাজুক। বন্যা বা জলোচ্ছ্বাসে এই সব বেড়ীবাধঁ ভেঙ্গে ভিতরে পানি প্রবেশ করার আশংকা রয়েছে। এছাড়া হাজির হাট ইউনিয়নের সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান, দাসের হাট এলাকায় মেঘনার ভাঙ্গনের তীব্রতা রয়েছে। হাজির হাট ইউনিয়নের ভুইয়ারহাট বিকল্প সড়ক টু উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বেড়ীবাধঁ পর্যন্ত কোন বেড়ীবাধঁ না থাকায় প্রতিদিন জোয়ারের পানি ঢুকে চরমরিয়ম গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বিকল্প সড়কের পাশে বেড়ীবাধঁ ও স্লুইসগেট নির্মানের দাবী ভূক্তভোগীদের।
উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাষ্টারহাটের পশ্চিম পাশের বেড়ীবাঁধ ও দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের সূর্যমুখী বেড়ীবাঁধ, বাতির খাল ও ঢালী মার্কেট সংলগ্ন এলাকার বেড়ীবাঁধের অবস্থাও নাজুক।
ভাঙ্গা বেড়ীবাধঁ নির্মানের বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহমান বলেন, ইতিপুর্বে বেড়ীবাধঁগুলো নির্মান করা হয়েছে। বেড়ীর ভিতরের পানি সরানোর জন্য মানুষ আমাদের না জানিয়ে বেড়ীকেটে পাইপ দিয়ে পানি সরানোর কারনে বেড়ীবাধঁ ভেঙ্গে যাচ্ছে। যেসব স্থানের বেড়ীবাধঁ ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে সেসব স্থানগুলো মেরামত করার ব্যাবস্থা নিচ্ছি।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা জানান, ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ দিয়ে যে কোন সময় লোকালয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করতে পারে। এ বিষয় পাউবো’কে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত কার্যকর ব্যাবস্থা গ্রহন করব।