করোনা ভাইরাসের সংক্রমনরোধে দেশজুড়ে চলছে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ। মাঠ লেভেলে তা বাস্তবায়নে প্রশাসনের অন্য কর্তা ব্যক্তিরা যখন ঘাম ঝড়া পরিশ্রম করছেন, ঠিক তখনই স্থানীয় কিছু লোকজন নিয়ে ওসির স্বপরিবারে নৌকা ভ্রমনের ছবি ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কারো মুখেই মাস্ক নেই। ফলে সমালোচনার ঝড় ওঠেছে। এ চিত্র কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায়। ভাইরাল হওয়া ছবিগুলো প্রত্যেকটিতেই ওসি সাদেকুর রহমানের মাস্ক বিহীন ছবি রয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার কিছু স্থানীয় লোকজন ও পরিবার পরিজন নিয়ে মুরাদনগর সদর ইউনিয়নের তিতাস ব্রীজের নীচে নৌভ্রমনে যায় ওসি সাদেকুর রহমান। তার সাথে থাকা লোকজন সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দিতে থাকেন একর পর এক। একাধিক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি থেকে এ ছবি প্রকাশ হওয়ার পর নিমিষেই ভাইরাল হয়ে যায়। কেউ ওসিকে পছন্দ করে ছবি শেয়ার করেছেন। আবার কেউ কারো মুখেই মাস্ক নেই এমন ছবি দেখে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। থানার একজন ওসি ও উপজেলার দায়িত্বশীল একজন ব্যক্তি এমন ছবি ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।
সরকারি প্রজ্ঞাপনে বিধিনিষেধের নির্দেশনার মধ্যে-মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ, পিকনিকসহ জনসমাগম হয় এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কেউ নির্দেশনা অমান্য করলে গ্রেফতার কিংবা অর্থদন্ডের কথা উল্লেখ রয়েছে।
এদিকে, নৌকায় বসা ওসি সাদেকুর রহমানসহ বেশীরভাগ নৌকাযাত্রীর মুখে মাস্ক নেই। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ফেসবুকে এ নিয়ে ওসির সমালোচনা করে পোস্ট দিচ্ছেন অনেকে।
তফাজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার ফেসবুকে ছবিগুলো শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আবারো প্রমাণিত হলো- আইন সবার জন্য সমান নয়! সকাল বেলা কর্তব্যরত অবস্থায় লকডাউন অমান্য কারীদের দৌড়ায়, আর ওনি নিজেই বিকেল বেলা পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দ ভ্রমনে বের হওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত? তাছাড়া পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে নৌকার ছাদে ওঠে ঝুকিপূর্ন ছবিও প্রকাশ করেছেন, যা আমাদের কাছে দায়িত্বহীনতা প্রকাশ পেয়েছে।’
আক্তার মিয়া নামের একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেন, এবার দৌড়াবেন কাকে জনাব? আপনারা এগুলো করলে আনন্দভ্রমন, আর সাধারণ মানুষ করলে করোনাভ্রমন।
মুরাদনগর থানার ওসি সাদেকুর রহমান বলেন, আমার পরিবারের লোকজন জেলা সদরে থাকেন, ঈদ উপলক্ষে আমার এখানে এসেছেন। তাই তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা যোগে ঘুরতে বেরিয়েছি। আমার তো একটা ব্যক্তিগত জীবন আছে। আমি স্ত্রী-সন্তানদের সময় দিতে পারছি না বলে সঙ্গে নিয়ে গেছি। এটা নিয়ে নিউজ করার মতো কী আছে?’
কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, যদি মুখে মাস্ক না থাকে তাহলে কাজটি বেআইনী। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।