শেরপুরের নাকুগাঁও স্থলবন্দরের কালাকুমা এলাকায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত, নিষেধাজ্ঞা কোনটাই মানছে না বেপরোয়া বালুদস্যুরা। রাতের আঁধারে ড্রেজার বসিয়ে ভোগাই নদীর তীর ও তীরবর্তী ফসলি জমি, ব্যক্তি মালিকানাধীন বনায়ন সবকিছু ধ্বংস করে দিচ্ছে। এমন দুরাবস্থায় প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের কালাকুমা বাজার সংলগ্ন ভোগাই নদীর পশ্চিম তীরে হাতিপাগার মৌজা থেকে প্রতিরাতেই উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। স্যালো ইঞ্জিন চালিত ড্রেজার মেশিনে রাতভর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় নদীর পশ্চিম তীর নদীগর্ভে ধ্বসে পড়ছে। সেইসাথে নদী তীরবর্তী রেকর্ডীয় ব্যক্তি মালিকানা ফসলি জমি ও কাঠের বনায়ন ধ্বসে পড়ছে নদীগর্ভে। এমতাবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিবাদ করলেও তা মানছে না বালু ব্যবসায়ীরা। বালু মহাল ও ইজারার বাইরে থাকা এসব স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার ফলে যেমনি ধ্বংস হচ্ছে নদীর তীর, তেমনি রাতভর বিকট শব্দে মেশিন চলায় আশপাশে কয়েক পাড়ার মানুষের ঘুম হারাম হচ্ছে। বালুর মেশিনের বিকট শব্দে নদী তীরবর্তী এলাকার শিক্ষার্থী ও রোগীরাও বিপাকে।
ভুক্তভোগীরা জানান, তন্তর গ্রামের নূর হোসেন, মোগল, তোতা মিয়া, সাইফুল, বাবুল, হেলাল ও কালাকুমা গ্রামের বিল্লাল হোসেন, ফিরোজুল, লালচাঁন মিলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে প্রতিনিয়ত।
ক্ষতিগ্রস্ত দোলোয়ার হোসেন জানান, নদীর পশ্চিম তীরে আমার বাবা আব্দুস সাত্তারের রেকর্ডীয় জমিতে আমি ইউক্যালিপ্টাস গাছের বাগান করেছি। কিন্তু বালু উত্তোলনকারীরা রাতের আঁধারে নদীর তীরে পাইপ লাগিয়ে তীর ভেঙে ফেলছে। তারপর ভেঙে ফেলা নদী তীরের নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। এতে আমার বেশকিছু গাছ ইতিমধ্যেই নদীতে পড়ে গেছে। বারবার নিষেধ করলেও বালু উত্তোলনকারীরা তা মানছে না। রাতের আঁধারে নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন করায় একইভাবে রেকর্ডীয় ফসলি জমি নদীতে বিলীন হচ্ছে হাতিপাগার গ্রামের আবুল কালাম, মজিবর রহমান ও আব্দুল হাইদের। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বালু উত্তোলনকারীরা দাবী করেন, তারা নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন তবে তীর ভাঙ্গছেন না, তীর এমনিতেই ভেঙ্গে পড়ছে। এটি বালু মহাল না হওয়া সত্বেও কেন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে এই মর্মে জানতে চাইলে তারা ব্যবসা করার সুযোগ চান।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলেনা পারভীন জানান, এ বিষয়ে আমরা অনেকদিন যাবত অভিযোগ শুনছি। যেহেতু বালু মহালের বাইরে এবং তারা অবৈধভাবে বালু তুলছে। তাই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।