করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেত প্রশাসনের নির্দেশে রাজশাহীর মোহনপুরে চলছে কঠোর লকডাউন। বন্ধ রয়েছে গণপিরবহন। ফলে পাইকার না আসতে পারায় পান বিক্রয় করা নিয়ে বিপাকের মধ্যে পড়েছেন চাষিরা। ক্রেতা না থাকায় কম দামে পান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন চাষিরা। চাষিদের দাবি, উৎপাদন খরচও উঠছে না।
স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর মোহনপুর পান চাষের জন্য আগে থেকে বিখ্যাত। পান চাষ লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি হচ্ছে পান বরজ। কৃষি অফিসের তথ্যমতে মোহনপুর উপজেলায় ১ হাজার ১ শত ৮০ হেক্টর জমিতে পান বরজ রয়েছে। পান বরজের সংখ্যা ১৪ হাজার ৪ শত। দেখতে ও স্বাদে ভালো হওয়ায় এই এলাকার পানের চাহিদা বেশি। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হয়ে থাকে এখানকার পান। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে বসে পানের হাট। এসব হাট-বাজারে পান নিয়ে যান চাষিরা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররাও আসেন পান কিনতে। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে পাইকারী ব্যবসায়ীরা না আসতে পারায় পান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।
মোহনপুর উপজেলার তাঁতীপাড়া গ্রামের চাষি মাহাবুর রহমান, আবুল কালাম ও শহিদ আলম বলেন, 'এই এলাকার মানুষের মুল পেশা পান চাষ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে আমরা সংকটের মধ্যে রয়েছি। মৌসুম শেষ হওয়ায় পান বরজে রাখতেও পারছি না, রাখলে পান মোটা হয়ে যাচ্ছে, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার হাট-বাজারে পানের দাম খুব কম। ফলে পান বিক্রিও করতে পারছি না।এতে করে উৎপাদন খরচই উঠছে না। ফলে বরজে যেসব শ্রমিক কাজ করছেন, তাদের মজুরিও ঠিকমতো দিতে পারছি না।'
মোহনপুর উপজেলার বাদেজুল গ্রামের পান ব্যবসায়ী আবদুর গফুর ও মোজাহার হোসেন বলেন, 'হাটে পানের আমদানি বেশ ভালো রয়েছে কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে বাইরের পাইকাররা আসতে পারছেন না। ফলে চাহিদা কম। সেই কারণে পানের দামও কম।'
মোহনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, 'উৎপাদন খরচ কম ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় উপজেলায় পানের আবাদ দিন দিন বাড়ছে। দাম কম থাকলেও পানের বর্তমান অবস্থা ভালো, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে পানের বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করা হয়।'