রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নে মাদকসেবী এক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু নিয়ে ওই এলাকার লোকজন আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। এলাকাবাসী জানায়,দিনভর দুই থেকে পাঁচ টাকা ধান্ধা করে প্রকাশ্যে রাতদিন মাদক সেবন কাজে ব্যস্ত থাকতো ওই যুবক। তার একমাত্র খাবার বিস্কুট চা এবং মাদক। তার ভাত পানি খেতে গত ১০ বছরেও এলাকাবাসীর চোখে পড়েনি। এমনকি তার সামনে খাবার দিলেও মন খারাপ করে বসে থাকতো। এক বাজারে দীর্ঘ কুড়ি বছর পার হলেও তার কোন প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজন একদিনের জন্য খোঁজ খবর নেয়নি। অথচ তার মৃত্যুর পর একাধিক প্রতিবেশি নিকটজন হিসেবে দাবিদার হয়েছে। গত ২৫ জুলাই আমোদপুর গ্রামের মৃত: আয়েন উদ্দিনের পুত্র বুলবুল মারা যাওয়ায় তার চাচাতো ভাই আল আমিন মিয়া বাদি হয়ে ওইদিন ৬ ব্যক্তির নামে পীরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং ২২/৩১২ তারিখ ২৫ /৭/২১। গ্রামবাসীর অভিযোগ লাশ নিয়ে বাণিজ্যে নেমেছেন বুলবুলের কতিপয় প্রতিবেশী। মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আমোদপুর গ্রামের মৃত্যু আয়েন উদ্দিনের পুত্র বুলবুল মিয়া। বটতলী বাজার জামে মসজিদের ওজু খানার ট্যাব প্রাই দিনই খুলে দেয়। এতে কোককোন দিন পুাের পানির ট্যাংকি খালি হয়ে যায়। গত ১৭ জুলাই বটতলী বাজারের হামিদুল ইসলামের পুত্র স্বর্ণ ব্যবসায়ী রোমান মিয়া বুলবুল কে পানির লাইন বিনা কারণে ছাড়তে নিষেধ করায় সে ক্ষেপে গিয়ে এক দোকানের রড নিয়ে রোমান কে আক্রমণ করে। এতে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করায় বুলবুল তার উপর চড়াও হয়। আমোদপুর গ্রামের মৃত্যু ওসমান গণির পুত্র আলম মিয়া ওই বাজারে তার নিজের চায়ের দোকান থেকে বুলবুলকে থামতে বলে। এক পর্যায়ে তারও উপর ক্ষেপে যায় বুলবুুল। আলম মিয়া তার দোকানে থাকা শুকনো একটি বাঁশ দিয়ে পাগলের পায়ে আঘাত করলে সে শান্ত হয়। পরে আলম মিয়া দোকানে বুলবুল চা বিস্কুট খেয়ে বাজারের একটি সেডে শুয়ে পড়ে। বিকাল বেলা বাজারে লোকজন বুলবুলকে অসুস্থ দেখে আলম মিয়াকে সংবাদ দিলে আলম তার বাড়িতে নিয়ে গোসল করে খেতে দেয় বুলবুলকে । ওই সময় সে আলম মিয়া কে বলেন তার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। সাথে সাথে তাকে মিঠাপুকুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে দেয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। এরপর কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে সেন্টাল ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে ডাক্তার বুলবুলকে কে ছাড়পত্র দেয়ায় তাকে বাড়ি নিয়ে আসা হয়। মামলার অভিযুক্ত আসামি আলম মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন- আমি বুলবুল কে এক সপ্তাহ ধরে রংপুর মেডিকেল ছিলাম। তাকে যথাযথ চিকিৎসাও দেই। এ সময় একবারের জন্য বুলবুলকে কোন প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজন তাকে দেখার জন্য আসেনি। তিনি আরও বলেন বুলবুলের মৃত্যুর পরে কয়েকজন অতি উৎসাহী ব্যক্তি প্রস্তুত ছিল আমার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য। এছাড়াও বুলবুলের জমি যারা জোরপূর্বক ভোগদখল করছে, যাদের জন্য বুলবুল পথে পথে ঘুরতো তারাই সুযোগ নিয়ে হত্যা মামলার বাদি সেজেছেন। এদিকে এলাকাবাসী এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।