দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে মেকারি কাজ করে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন রাজশাহীর মোহনপুরে রবিউল ইসলাম রবি মেকার। তেমন পাড়া-লেখা করতে পারেন তিনি। ১৮ বছর বয়স থেকে শুরু হয় জীবিকার জন্য লড়াই। সাইকেল ভ্যান মেরামতের পেশায় আছেন তিনি একটানা ৩০ বছর ধরে। মোহনপুর থানার মোড়ে তানোর রাস্তার পাশে ভাড়া দোকানে ভ্যান, রিকশা, বাইসাইকেল মেরামতের পাশা-পাশি অটোভ্যান তৈরী ভাড়া দেন তিনি।
রবিউল ইসলাম রবির বয়স এখন ৪৮ বছর। তিনি উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে। এলাকার সবাই তাঁকে এখন ‘রবি মেকার’ হিসেবেই চেনে। জীবন-জীবিকার তাগিদে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে তিনি সাইকেল মেরামতের পেশায় আছেন। ভ্যান, রিকশা, বাইসাইকেল মেরামতের কাজ করে তাঁর জীবন সংসার চলে। রবিউল ইসলামের দুই ছেলে। বড় ছেলে মামুনুর রশিদ তাঁর সাথে মেকারি কাজে সহযোগিতা করেন। ছোট ছেলে পড়াশুনা শেষ করে চাকুরির জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
সোমবার কথা হয় রবিউল ইসলামের সাথে। গল্পে গল্পেই তিনি শোনান জীবনযুদ্ধের গল্প। রবি বলেন, তাঁর সাইকেল মেকার হওয়ার কথা। কিন্তু জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়ে তিনি এখন সাইকেল মেকার! অবশ্য এজন্য তাঁর কোন দুঃখ নেই। 'আল্লাহ আমাকে অনেক ভালো রেখেছেন। এ বয়সেও শরীরে বড় ধরনের কোন অসুখ নেই। চোখে দেখতেও কোন সমস্যা হয় না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইসাইকেল ও ভ্যান গাড়ি মেরামত করে যা আয় হয় তাতেই কোন মতে সংসার চলে। তবে বর্তমানে কঠোর লকডাউনের কারণে দোকান খুলতে না পারায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’
রবিউল ইসলাম রবি জানান, এলাকার সাইকেল মেকার মজিবর রহমান তাঁর উস্তাদ। তাঁর কাছেই তিনি এ কাজ শিখেছেন। পরে একটি দোকানঘর ভাড়া করে নিজেই কাজ শুরু করেন। তিনিই মোহনপুর বাজারের প্রবীণ সাইকেল মেকার। তাঁর কাছ থেকে অনেকেই এ কাজ শিখে বর্তমানে জীবিকা নির্বাহ করছেন।