প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দেখা দেশের সবচে প্রবীন ও বয়স্ক মানুষ উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের শের আলী মিয়া হাওলাদার ইন্তেকাল করেছেন। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ১১৩ বছর। এ খবর নিশ্চিত করেন মহারাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম। জাতীয় পরিচয়পত্র মোতাবেক শের আলী মিয়া ১৯০৮ সালের ১৭ জুলাই (জাতীয় পরিচয়পত্র নং ৪৪১১৯৫৮৩৯৪৮৭০) জন্ম গ্রহন করেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে ঝিনাইদহ ৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার ছুটে যান। রোববার রাত ১০ টার দিকে শের আলীর পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
১৯১৪ সালে যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি সবেমাত্র কৈশর থেকে যৌবনে পা রেখেছেন। শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাহাপাড়া গ্রামে তারা বসবাস করতেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ভারত বর্ষ থেকে ব্রিটিশরা যখন সৈন্য সংগ্রহ শুরু করে, তখন শের আলী ও তার বড় মামা আমজাদ আলী সরদার যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ব্রিটিশ সৈন্যদলে নাম লেখান।
শের আলী মিয়া ও তার বড় মামা তখন যুদ্ধে না গিয়ে পালিয়ে যান ভারতের বনগাঁর কাঠালিয়া গ্রামে। পরবর্তীতে সপরিবারে ভারতে বসবাস শুরু করেন। ভারত থেকে তিনি প্রায় শরীয়তপুরের রাহাপাড়া গ্রামে আসা যাওয়া করতেন। আনুমানিক ২০/২২ বছর বয়সে তিনি পাশ্ববর্তী নলতা গ্রামের করম আলী খুনকারের মেয়ে আছিয়া খাতুনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। প্রথম পক্ষের এক কন্যা সন্তান হওয়ার পর স্ত্রীর আর কোন সন্তান হবে না জানতে পেরে তিনি নলতা গ্রামের তমিজ উদ্দীন মাঝির কন্যা রুপভান বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে ৫ ছেলে ও ১ মেয়ে। ১৯৬৮ সালে ছোট স্ত্রী রুপভান ও ১৯৯৯ সালে বড় স্ত্রী আছিয়া খাতুন ইন্তেকাল করেন।