খুলনা পাইকগাছায় বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে রাস্তায় ফেলে যান সন্তানরা। সোমবার রাতে এমন ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ছুটে গেলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক মো. আলতাফ হোসেনকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠান তিনি। প্রশিক্ষক ইউনিয়ন লিডার মো. ফয়সাল হোসেনকে সাথে নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। খুঁজে বের করেন ছেলেদের। ঘটনাটি উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে। গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় বহু লোকের উপস্থিতিতে চার ছেলেকে ডেকে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন ইউএনও। পরে বড় ছেলে রওশন গাজীর জিম্মায় বৃদ্ধ পিতা মেছের আলী গাজী (৯৮) ও মাতা সোনাভান বিবি (৮৬)কে রেখে বাকি তিন ছেলে মতলেব গাজী, মশিয়ার গাজী ও মোশাররফ গাজীকে আইনি পদক্ষেপ নিতে থানায় সোপর্দ করেন। এদিকে বৃদ্ধ দম্পতির জন্য বালতি, জগ, মগ, গামছাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের একটি সেট এবং একমাসের খাবার দিলেন মানবতার ফেরিওয়ালা বলে খ্যাত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। এই বৃদ্ধ পিতা মাতার খাদ্য, চিকিৎসা, পোশাকসহ যাবতীয় ব্যয়ভার এখন থেকে উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বহন করবে বলে ইউএনও জানান। মহানুভবতার পাশাপাশি মহত্বের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। ইউএনও পাইকগাছা সরকারী ফেসবুত আইডিতে লেখা হুবুহু তুলে ধরা হলো-এপার বাংলা ওপার বাংলার খুব পরিচিত সিনেমার গল্প। বাবা মা কষ্ট করে ছেলেদের মানুষ করে জমিজমা সব লিখে দিয়েছেন। এক পর্যায়ে বুড়ো বাবা মা সংসারে কোন কাজে লাগছে না দেখে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেয়া। বাবা মা একে অন্যের হাত ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। কেউ দয়া করে দুটো খাবার দিলে খাচ্ছে না দিলে না খেয়ে থাকছে। সিনেমার এই গল্পই আজ বাস্তবে দেখা মিললো গদাইপুর ইউনিয়নে। স্বচ্ছল স্বাবলম্বী ছেলেরা আয়েশ করে খেয়ে দেয়ে বর্ষার গান শুনছে আর নব্বই বছরের আরজ আলী আর পঁচাত্তর বছরের পরী বানু (ছদ্মনাম) ঝুম বৃষ্টিতে কাদা পানির মধ্যে নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। স্থানীয় চেয়ারম্যান এর উপস্থিতিতে বৃদ্ধ দম্পতিকে তাদের বড় ছেলের জিম্মায় দিয়ে আসা হয়। এসময় উক্ত দম্পতির একমাসের খাবার সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি দম্পতির বড় ছেলের নিকট প্রদান করা হয়। এই দম্পতির খাদ্য, চিকিৎসা, পোশাক সহ যাবতীয় ব্যয় ভার এখন থেকে উপজেলা প্রশাসন স্থানীয় চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে বহন করবে।