করোনাকালেও রাজশাহীর তানোরে গাঁজা হিরোইন, ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ব্যবহারের সঙ্গে বেড়েই চলছে চুরি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা। ফলে জিনিসপত্রের নিরাপত্তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১ মাসের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ও দোকানে ছাড়াও মসজিদের দানবক্সের টাকা পর্যন্ত ছুরির ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া হাট বাজারে ও বিভিন্ন অফিসে দিনে দুপুরে মানুষের ব্যবহৃত মোবাইল সেট ছিনতাই ও খুইয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। করোনাকালে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এলাকার চিহ্নিত চুরি ছিনতাই সিন্ডিকেট।
সম্প্রতি গত (২ আগস্ট) সোমবার দিবাগত রাতে সংবদ্ধ চোরের দল তানোর পৌর এলাকার চাঁদপুর মহল্লায় মজিবর মাস্টারের বাড়িতে কৌশলে দরজা খুলে গ্যাসের সিলিন্ডারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র চুরি হয়। ওই একই রাতে বাসচালক মুমিনের বাড়িতেও চুরির ঘটনা ঘটে।
এছাড়া শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদপুর মোড়ে সাজ্জাদের চায়ের দোকানে তালা ভেঙ্গে চুরির সময় হাতে নাতে ধরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পথচারী। পরে ওই পথচারীর হাতে পায়ে ধরে ছাড়া পাই জিওল মহল্লার বাসিন্দা হিরোইনখোর জাহাঙ্গীর ও আতাউর।
এনিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জিওল-চাঁদপুর ও আকচা গ্রামে বর্তমানে গাঁজা, ইয়াবা ও হিরোইনসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ব্যবহার এবং বিক্রির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে ওইসব এলাকায় ছোট বড় চুরির ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। মূলক এলাকার চিহ্নিত হিরোইনখোর জাহাঙ্গীর, আতাউর, রাসেল, মড়- ও ব্যবসায়ী মুনজুর মাদকের টাকা জোগাড় করতে চুরি ছিনতাইয়ের পথ বেছে নিয়েছে বলে জানান মহসিন রেজা। তিনি বলেন, মহল্লায় এতোটা চুরির প্রভাব বেড়েছে যে তাদের মসজিদের দানবক্সের তালা ভেঙ্গে টাকা চুরির ঘটনাও পর্যন্ত ঘটেছে।
সম্প্রতি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক রোগীর দামী মোবাইল ফোন ছিনতাই করে দৌড় দেয় ছিনতাই চক্র। এ ছাড়া বেশ কয়েক মাস আগে মুন্ডুমালা বাজারে নাইটগার্ডকে পিটিয়ে দোকানের মালামাল নিয়ে যায় চোরের দল। ওই বাজারেই দিনে-দুপুরে জাহাঙ্গীর নামে এক চোরকে ধরে পুলিশে দেয় জনতা।
এরআগে পর্যায়ক্রমে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১৫টির মতো চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুর মহল্লার হিরোইনখোর লায়েবের পুত্র রাসেল জমির মাঠ থেকে আলুর বস্তা চুরি করে নিয়ে যাবার সময় হাতে নাতে ধরে আলুর মালিক আয়ুব আলী। এ সময় রাসেলের আত্মীয়রা তাকে জিম্মায় নিয়ে যায়।
রজব আলী নামের কৃষক জানান, এবার আমন মৌসুমে বৃষ্টির পানিতেই কৃষকেরা আমন চাষাবাদ করেছেন। পানি সেচের প্রয়োজন পড়েনি। এজন্য কৃষকরা মাঠে তেমন যায়নি। এসুযোগে বুধবার দিবাগত রাতে চোরের দল তাদের এলাকায় বিএমডিএর ৩টি ট্রান্সফর্মার করে নেয়। একই কাইদায় উপজেলার টেটনা পাড়া মৌজা, ঝিনাখোর মৌজা, বাধাঁইড় মৌজা ও পাঁচন্দর মৌজা থেকে ১৭টি ট্রান্সফর্মার চুরি গেছে।
এনিয়ে বিএমডিএর তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত ১৭টি ট্রান্সফর্মার ও তার চুরি হয়েছে। প্রতিটি গভীর নলকূপের অপরেটদের সতর্ক করা হয়েছে। এ ছাড়া চুরি ঠেকাতে এলাকায় মাইকিং করা হয়।
তানোর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, চুরি ও ছিনতাই ঠেকাতে থানা এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। এলকার বিভিন্ন হিরোইনখোরদের চুরির ঘটনা নিয়েও অনুন্ধান চলছে বলে জানান ওসি।