প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রামণ থেকে মানুষকে রক্ষায় গ্রামাঞ্চলে ভ্যাকসিন দেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গণ টিকা দিতে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও তৎসংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের মানুষকে টিকার আওতায় আনার সিদ্ধান্তে মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে। তারা সরকারের এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
জানাগেছে, প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে মানুষকে রক্ষায় সরকার প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে গণ টিকার আয়োজন করেছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে। চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত। আমতলী ও তালতলী উপজেলায় ১৮ বছরের উর্দ্ধে দুই লক্ষ ২৫ হাজার এক’শ ৩৩ জন মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে আমতলীতে এক লক্ষ ৫৩ হাজার চার’শ ৩৩ এবং তালতলীতে ৭১ হাজার ৭০০। এ মানুষকে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস টিকা দেয়ার জন্য দুই লক্ষ ২৫ হাজার এক’শ ৩৩ ভায়েল টিকার প্রয়োজন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে টিকার আওতায় আনার জন্য আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। দুই উপজেলার ১০ টি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও তৎসংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা প্রদানের জন্য কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ১০টি টিকাদান কেন্দ্রে ৩০ টি বুথে এ টিকা দেয়া হবে। সফলভাবে টিকাদান সম্পন্ন করে ৬০ জন টিকাদান কর্মী ও ৩০ জন সুপার ভাইজারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৩০ টি বুথে ৩ জন করে মোট ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন। প্রত্যেক বুথে ৬০০ জন করে একটি কেন্দ্রে এক হাজার ৮’শ জন মানুষকে টিকা দেয়া হবে। এভাবে ১০ টি কেন্দ্রে ৭ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ৫ দিনে ১৮ হাজার মানুষকে টিকা দেয়া হবে। ১৮ হাজার মানুষকে টিকা দেয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ৯ হাজার ভায়েল টিকা চাহিদা দিয়েছেন। চাহিদা অনুযায়ী বরগুনা সিভিল সার্জন অফিস টিকা সরবরাহ করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনয়েম সাদ। এদিকে গ্রামাঞ্চলের টিকা দেয়ার খবরে সাধারণ মানুষের মাঝ স্বস্থি ফিরে এসেছে। তারা সরকারের এমন যুগান্তকারী সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
কাউনিয়া গ্রামের বৃদ্ধা সোনাবরু বেগম বলেন, মুই বুড়া বয়সে টিহা দেতে পারমু। এতে মোর ভালো লাগছে। কষ্ট অইলেও মুই টিহা দেতে যামু।
আমড়াগাছিয়া গ্রামের অটো রিকসা চালক মজিদ আকন বলেন, হারা দিন কষ্ট হইর্যা রিকসা চালাই। কত মানুই গাড়ীতে টানি। কার গায় করোনা আছে মুই কইতে পারি। কি হরমু প্যাডের দায়ে রিকসা চালান লাগে। এ্যাহন টিকা দেতে পারমু। এতে মোর মানু টানতে সোমস্যা অইবে না।
আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ হুমায়ুন করিব বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষকে টিকার আওতায় আনার উদ্যোগ সরকারের একটি যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। এতে গ্রামাঞ্চলের মানুষ সুরক্ষিত থাকবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুল মুনয়েম সাদ বলেন, গ্রামের মানুষকে টিকার আওতায় আনার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে আমতলী ও তালতলী ্উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের ১০ টি টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই ১০ টি টিকাদান কেন্দ্রে ৩০ টি বুথে টিকা দেয়া হবে। একটি কেন্দ্রে এক হাজার ৮’শ মানুষকে টিকা দেয়া হবে। ওই অনুসারে ১০ টি কেন্দ্রে ১৮ হাজার মানুষকে টিকা দেয়ার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট থেকে এ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে। চলবে ১২ আগস্ট পর্যন্ত। তিনি আরো বলেন, পর্যায়ক্রমে দুই উপজেলার ১৮ বছরের উর্দ্ধে সকল মানুষকে টিকা দেয়া হবে।