সাবেক জেল কর্মকর্তার সাথে অভিনব প্রতারণার ঘটনায় অভিযুক্ত ভূয়া ম্যাজিস্ট্রেট তাসনিম সরকার ওরফে অনামিকাকে গ্রেফতার করেছে রংপুর পিবিআই। বৃহস্পতিবার দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, গত ২ আগস্ট রংপুর নগরীর সিও বাজারের বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রংপুর কারাগারের সাবেক সার্জেন্ট ইনস্ট্রাক্টর আনজু মিয়া (৫১)। এ ঘটনায় আনজুর স্ত্রী রংপুর মেট্রোপলিটন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। পরদিন ৩ আগস্ট পিবিআইয়ের একটি টিম নিখোঁজ আনজু মিয়াকে রংপুর নগরীর ডিসির মোড়ে অবস্থিত ‘সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্র’ থেকে উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আনজু জানান, গত ৬ মাস আগে বিমানে ভ্রমণের সময় অনামিকার সাথে পরিচয় ও ব্যক্তিগত ফোন নম্বর আদান-প্রদান হয় আনজু’র। এরপর ২ আগস্ট সকালে অনামিকা ফোনে আনজুকে জিলা স্কুলের গেটে ডেকে পাঠান। সেখানে একটি নোহা গাড়িতে বসে থাকা অনামিকাকে দেখে আনজু এগিয়ে গেলে ২-৩ জন অপরিচিত ব্যক্তি তাকে ঘিরে ফেলে এবং জোরপূর্ব পার্শ্ববর্তী সুস্থ জীবন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এরপর আনজুর দেহ তল্লাশী করে নগদ ৪৪ হাজার ২৫০ টাকা এবং হাতঘড়ি, স্বর্ণের আংটি, ড্রাইভিং লাইসেন্স খুলে নেয়। এ বিষয়ে আনজু আটককারীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলে ভূয়া ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকার অনুরোধে মাদকাসক্তের চিকিৎসার জন্য নিরাময় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। এরপর জব্দকৃত টাকা ও স্বর্ণের জিনিষপত্র অনামিকা নিয়ে বাকী কাপড় চোপড় ও আনজুর মোটরসাইকেল ভাইয়ের এসে নিয়ে যাবে বলে সটকে পড়ে অনামিকা। এরইমধ্যে নিরাময় কেন্দ্র থেকে আনজুর ডোপ টেস্টও করা হয়। এদিকে আনজু’র নিখোঁজের বিষয়টি পিবিআইয়ের নজরে আসলে ৩ আগস্ট তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে তাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর পিবিআইয়ের সদস্যরা দিনাজপুর থেকে আনিকা তাসনিম ওরফে অনামিকাকে গ্রেফতার করে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, কথিত নারী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতারক অনামিকা সরকার ও অন্যান্য সদস্যরা ছদ্মবেশে নিত্য নতুন প্রতারণা করে মানুষকে ঠকিয়ে থাকে। এদের নামে বিভিন্ন থানায় মামলাও রয়েছে। এ মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত অনামিকাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।